ইউনিসেফ বাংলাদেশের আমন্ত্রণে গতকাল সোমবার তাদের ঢাকা অফিসে ‘বাংলাদেশে শিশুদের ভবিষ্যৎ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সুরক্ষা ও করনীয়’ বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন।
এ প্রতিনিধিদলে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন এবং জামায়াত নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। শিশুদের অধিকার নিশ্চিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ইউনিসেফের ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে আয়োজিত এ সভায় ইউনিসেফের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারী দলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত এর রিপ্রেজেনটেটিভ রানা ফ্লাওয়ার্স।
আলোচনা সভায় ইউনিসেফ বাংলাদেশ-এর শিশুদের সাম্প্রতিক অবস্থার উপর গবেষণার কিছু চিত্র তুলে ধরা হয়। গবেষণায় বলা হয়-বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে মাত্র ১৫%-২০% প্রসূতি মায়ের সিজারিয়ান ডেলিভারি (অপারেশনের মাধ্যমে শিশুর জন্ম) প্রয়োজন হয়; কিন্তু বাস্তবে, হাসপাতালে/ক্লিনিকে ৭৫% মা সিজার করতে বাধ্য হচ্ছেন। এটি শুধু জনস্বাস্থ্যের জন্য সংকট নয়, বরং একটি বৃহৎ সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাপও সৃষ্টি করছে। এছাড়া জানানো হয় যে, প্রায় ৩১% শিশু অষ্টম শ্রেণিতে পৌঁছানোর আগেই ঝরে পড়ে-যা একটি জাতির ভবিষ্যৎ বিকাশে বড় বাঁধা ও হুমকিস্বরূপ। শিশুদের সঠিক পুষ্টি, মানসিক স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং সামগ্রিক বৃদ্ধি ও বিকাশ নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এসময় মিয়া গোলাম পরওয়ার স্পষ্টভাবে বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের আসন্ন ইশতেহারে শিশুদের ভবিষ্যৎ, অধিকার, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে। তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি-সুস্থ, শিক্ষিত ও নিরাপদ শিশুরাই গড়ে তুলবে একটি ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা শিশুদের অধিকার রক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থার সংস্কার, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সিজারিয়ান বার্থ (অপারেশনের মাধ্যমে শিশুর জন্ম) -এর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি কমানোর লক্ষ্যে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দেন।