ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যতগুলো ইস্যু ছিল, সবগুলো নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শুক্রবার ব্যাংককের হোটেল সাংগ্রিলা ব্যাংককে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা জানান। শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের কিছু স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যু যেমন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা, শেখ হাসিনা ভারতে বসে যে অনেক উসকানিমূলক মন্তব্য করছেন, সেগুলোর বিষয়ে কথা হয়েছে। এছাড়া সীমান্ত হত্যা, গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির নবায়ন, তিস্তার পানি প্রসঙ্গেও আলাপ হয়।’ বৈঠকটি গঠনমূলক, কার্যকর এবং ফলপ্রসূ হয়েছে বলেও জানান প্রেস সচিব।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ভারতে পলায়নের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে প্রথমবারের মত দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ব্যাংককের সাংগ্রিলা হোটেলে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো দুই নেতার মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে দেখা হলো। আর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাসের মাথায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই বৈঠক হলো।

বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই প্রধান দেশের নেতারা পারস্পরিক শ্রদ্ধার সাথে এবং সংলাপের জন্য একে অপরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তাদের ৪০-মিনিটের বিনিময় ছিল অকপট, উৎপাদনশীল এবং গঠনমূলক। প্রফেসর ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্ককে গভীরভাবে মূল্যায়ন করে। ১৯৭১ সালে আমাদের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময়ে ভারত সরকার এবং জনগণের অটল সমর্থনের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।

যদিও এই দুই সরকার প্রধানের মধ্যে এটি প্রথম সরাসরি বৈঠক ছিল, অধ্যাপক ইউনূস জোর দিয়েছিলেন যে দেশগুলি গত আট মাসে বহু দ্বিপাক্ষিক মিথস্ক্রিয়া রয়েছে। দুই দেশের সম্পর্কের চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা আমাদের উভয় দেশের জনগণের স্বার্থে সম্পর্ককে সঠিক পথে আনতে আপনার সাথে একসাথে কাজ করতে চাই।

প্রসঙ্গত, প্রফেসর ইউনূস বিমসটেকের পরবর্তী দুই বছরের জন্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। গ্রুপের সাত সদস্যের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য ভারতের সমর্থন চান প্রফেসর ইউনূস। তিনি গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন এবং তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি শেষ করতে আলোচনার আহ্বান জানান।

জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক ইউনূসকে বিমসটেকের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য অভিনন্দন এবং ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, নয়াদিল্লি সবসময় ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। তিনি বলেন, দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক ঐতিহাসিক।

প্রধানমন্ত্রী মোদি অধ্যাপক ইউনূসের বৈশ্বিক মর্যাদার কথা উল্লেখ করে বলেন, ভারত সবসময় একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশকে সমর্থন করে। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের কোনো বিশেষ দলকে সমর্থন করে না। আমাদের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সাথে।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশের অনুরোধের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান, যা ভারত সরকারের কাছে মুলতুবি রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন গণমাধ্যমে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন; যা ভারত তার প্রতি প্রসারিত আতিথেয়তার অপব্যবহার বলে মনে হচ্ছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত মিথ্যাচার করছেন বলেও অভিযোগ করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, আমরা অনুরোধ করছি যে ভারত সরকার তাকে আপনার দেশে থাকাকালীন এই ধরনের উস্কানিমূলক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এসময় তিনি জুলাই আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার গণহত্যার বিষয়টি সবিস্তারে সামনে আনেন। এবং বলেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং বিশেষভাবে তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন “আংশিকদের গ্রেপ্তার করতে, তাদের হত্যা করতে এবং তাদের লাশ লুকিয়ে রাখতে।

এদিকে শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে উত্তেজনার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে দায়ী করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারতের সংযুক্তি একটি দেশের সঙ্গে, কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে নয়। অধ্যাপক ইউনূস সীমান্ত হত্যার বিষয়টিও উত্থাপন করেন এবং প্রাণহানির সংখ্যা কমানোর ওপর জোর দেন। তিনি বলেন দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করা শুধুমাত্র অনেক পরিবারকে বড় যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করবে না বরং আস্থা তৈরি করতে এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতেও সাহায্য করবে।

সীমান্ত হত্যা বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রফেসর ইউনূস বলেন, এই হত্যাকাণ্ডগুলো বড়ই বেদনাদায়ক। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারতকে উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানান।

জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারতীয় সীমান্ত সেনারা শুধুমাত্র আত্মরক্ষার জন্য গুলী চালায় এবং ভারতীয় ভূখণ্ডে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার ওপর জোর দেন দুই নেতা।

প্রফেসর ইউনূস বাংলাদেশের বিমসটেকের চেয়ারম্যান হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে নরেন্দ্র মোদি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ বিমসটেকের দৃশ্যমানতা বাড়ানোর লক্ষ্য রাখে এবং আশা করে যে সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী পণ্য রপ্তানি ও আমদানির জন্য একটি দক্ষ রুট তৈরি করবে। এই অঞ্চলের জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণে সক্ষম একটি কার্যকর ও প্রাণবন্ত সত্তা হিসেবে আবির্ভূত হবে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির উদ্বেগের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবেদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এগুলির বেশিরভাগই ভুয়া খবর। তিনি ভারতীয় নেতাকে কথিত হামলার তদন্তের জন্য বাংলাদেশে সাংবাদিকদের পাঠানোর আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি দেশে ধর্মীয় ও লিঙ্গ সহিংসতার প্রতিটি ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থা চালু করেছেন এবং তার সরকার এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য গুরুতর পদক্ষেপ নিচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোঃ তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত গত কয়েকদিন ধরে প্রতিবেশী দুই দেশের শীর্ষ নেতার বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের গণমাধ্যমে আলোচনা ছিল। বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আগ্রহ প্রকাশ করে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ঢাকায় কর্মকর্তারা। বাংলাদেশের গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ হলেও, ভারতীয় কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেননি বিষয়টি। ফলে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এক ধরনের অনিশ্চয়তা ছিল বৈঠকটি নিয়ে। শুক্রবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।

যুব উৎসবের আয়োজন করার আহ্বান

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস বিমসটেক সচিবালয়কে আরও কার্যকর করতে এবং সদস্য রাষ্ট্রের তরুণ ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ব্যস্ততা বাড়াতে বিমসটেক যুব উৎসবের উদ্যোগ নিতে বলেছেন। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন শেষে বিমসটেকের নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বিমসটেকের মহাসচিব ইন্দ্র মণি পান্ডেকে এই নির্দেশনা দেন। মানি, একজন প্রাক্তন ভারতীয় কূটনীতিক, সংগঠনের ভবিষ্যত উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করার জন্য শীর্ষ সম্মেলনের শেষে প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাত করেন। প্রধান উপদেষ্টা মানিকে দুই বছর পর ঢাকায় বিমসটেকের পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলন করার সময় একটি পৃথক যুব সমাবেশ নিশ্চিত করতে বলেন।

নরেন্দ্র মোদিকে ছবি উপহার

এদিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি ছবি (ফটোগ্রাফ) উপহার দিয়েছেন। বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে বৈঠককালে অধ্যাপক ইউনূস নরেন্দ্র মোদির হাতে ছবিটি তুলে দেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত ১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক ইউনূসকে স্বর্ণপদক প্রদান করেন। সেই মুহূর্তটি ধারণ করা ছবি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা।

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বৈঠকে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে আলোচনায় বসেন দুই নেতা। তবে তাদের মধ্যে কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। গত ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আজ প্রথমবারের মতো ড. ইউনূসের ও নরেন্দ্র মোদির আলোচনায় বসলেন। এর আগে বৃহস্পতিবার বিমসটেক সম্মেলনের নৈশভোজে ড. ইউনূসের ও নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ হয়। নৈশভোজে একই টেবিলে তারা পাশাপাশি বসেন।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক : ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক : এ ছাড়া অধ্যাপক ইউনূস দিন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এরআগে বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের সামাজিক উন্নয়ন ও মানব নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ভারাওয়াত সিল্পা-আর্চা এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী জিরাপর্ন সিন্ধুপ্রাই গতকাল অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক : একইদিনে শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী হারিনী আমারাসুরাইয়ার সাথে দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক করেন। বিমসটেস সম্মেলনের সাইডলাইনে তারা এই বৈঠক করেন তারা। দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা সম্প্রসারণের অঙ্গীকার করেন। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধারে তার দেশের প্রচেষ্টার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে শ্রীলঙ্কার সংসদ একটি নতুন আইন অনুমোদন করেছে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা বিলিয়ন ডলার ফিরিয়ে আনার অর্ন্তর্বতী সরকারের প্রচেষ্টায় শ্রীলঙ্কার সমর্থন চেয়েছেন। দুই নেতা জুলাই বিদ্রোহের বিভিন্ন দিক নিয়েও আলোচনা করেন এবং দুই দেশের মধ্যে জনগণের মধ্যে যোগাযোগের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা এবং আগামী বছরের ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তার প্রশাসনের পরিকল্পনা বর্ণনা করেন। বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোঃ তৌহিদ হোসেন, এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ ও পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

আসিয়ানের সদস্যপদ পেতে থাইল্যান্ডের সমর্থন

অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়াপন নেশনসের (আসিয়ান) সদস্যপদ পেতে থাইল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি আসিয়ানের শীর্ষ দেশগুলোরও সমর্থন চান তিনি। ৬ষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনের শেষদিনে একটি ব্রেকফাস্ট মিটিংয়ে যোগ দিয়ে এ সমর্থন চান তিনি। এ সময় দেশটির শীর্ষ কূটনীতিকদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক করে। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী অভিজিৎ ভেজ্জাজিভাসহ মোট ১৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি বৈঠকে অংশ নেন। এছাড়াও বৈঠকে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংক, বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার, শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বহুপাক্ষিকতায় বিশ্বাসী। দেশটি সার্ক ও বিমসটেকের সদস্য। এখন আসিয়ানের সদস্য হওয়া বাংলাদেশের চূড়ান্ত লক্ষ্য। এ সময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করতে আঞ্চলিক জোটগুলোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্ব বাণিজ্যের সাম্প্রতিক পরিবর্তন সম্পর্কে তিনি বলেন, বিশৃঙ্খলা অনেক কিছু নাড়িয়ে দিতে পারে। আমাদের আরও বেশি সহযোগিতার প্রয়োাজন। আমরা কি নতুন একটি ব্যবসায়িক মডেল নিয়ে ভাবতে পারি না? বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।