নেপালের পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের বিষয়ে বাংলাদেশ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, নেপালে আটকেপড়া জাতীয় দলের ফুটবলারসহ সবাই নিরাপদে আছেন। পরিস্থিতি শান্ত হলেই তারা ফেরত আসতে পারবেন।
গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, যতক্ষণ পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, আমরা কিছুই করতে পারব না। কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে সহিংস গণআন্দোলনে পুরো নেপালজুড়েই যেন আগুন জ্বলছে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। পার্লামেন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। আগুন জ্বলেছে সুপ্রিম কোর্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনেও। এমনকি দেশটির প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত বাড়িও পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগে নেপালের জেলগুলোতেও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বন্দিদের সংঘর্ষ এবং বন্দিদের পালিয়ে যাওয়ার খবর মেলে। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তার ভার নিয়েছে সেনাবাহিনী। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে ভ্রমণে বিঘœ ঘটছে।
নেপালে থাকা বাংলাদেশীদের ভারতের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা আছে কি না- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তা সম্ভব নয়, কারণ তাদের কাছে ভারতীয় ভিসা নেই। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন, কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ দূতাবাস সেখানে আটকে থাকা নাগরিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছে। উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশীরা সেখানে লক্ষ্যবস্তু হননি। বলেন, “নেপালের জনগণের আমাদের প্রতি কোনো ক্ষোভ বা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নেই। তারা হোটেলে তাদের রাজনৈতিক নেতাদের খুঁজতে গিয়েছিল। যখন তারা দেখলো বাংলাদেশীরা হোটেলে আছে, তখনও তাদের কোনো ক্ষতি করেনি।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে তিনি এখনও কোনো হালনাগাদ তথ্য পাননি। তিনি বলেন, আমি যখন হালনাগাদ তথ্য পাব, তখন আপনাদের জানাতে পারব। রাশিয়া ও ইউক্রেনের বাফার জোনে বাংলাদেশী সেনা পাঠাতে জাতিসংঘ প্রস্তাব দিলে সম্মতি জানানো হবে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জাতিসংঘ। আশা করি তাদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হবে। যুদ্ধবিরতি হলে জাতিসংঘ নিশ্চয়ই কোনো রোল নেবে। আমাদের যে অভিজ্ঞতা আছে শান্তিরক্ষায়, সেখানে যদি এমন কোনো পরিস্থিতি হয় আমরা তো নিশ্চয়ই অংশ নিতে চাইব।