আগামী নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসুক তাদের জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থেকে জুলাই সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। স্থানীয় সময় গত রোববার নিউইয়র্কে এক মতবিনিময় সভায় তিনি জানান, সংস্কার, বিচার আর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করে যাচ্ছে; সংস্কার কমিশন গঠন করে সেই লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার পথেই রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, অনেক ত্যাগ আর রক্তের বিনিময়ে ৫ আগস্ট হাসিনার পতন হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে নতুন সরকার গঠন করা হয়েছে। জুলাই ঘোষণার মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গৃহীত হওয়ার পর এখন জুলাই সনদ নিয়ে কাজ চলছে। জুলাই অভ্যুত্থান বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে স্পৃহা ছিল তা আগামীতেও নিয়মিত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম এই অগ্রসৈনিক।
এদিকে তথ্য উপদেষ্টার নিউইয়র্কে আগমনের প্রতিবাদে কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে ঢোকার সময় আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে হেনস্তার চেষ্টা করেছেন। এক পর্যায়ে অফিসের প্রবেশ পথের দরজা ভাঙচুর করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ওই অনুষ্ঠানে আসা বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, একটা দেশে রাজতন্ত্র চলছিল, সে দেশের রাজা ছিলেন, রাজার বোন ছিলেন, রাজার ছেলে-মেয়েরা রাজপুত্র ছিলেন। পুরো দেশটা তাঁদের ছিল, আপনারা ছাত্র-জননেতারা রক্ত দিয়ে সেই রাজার পতন ঘটালেন, দেশ থেকে বিতাড়িত করলেন, এখন সে একটা ডিম নিক্ষেপ করবে, সে একটা কটূক্তি করবে, মাহফুজ আলমের পতন চাইবে, এটাই তো স্বাভাবিক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য উপদেষ্টা জুলাই আন্দোলনে প্রবাসীদের অংশগ্রহণের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদে প্রবাসীদের অবদান উল্লেখ থাকবে। আমি কোনো রাজনৈতিক দলের অংশীজন নই। আমরা চাই, ভবিষ্যতে যারাই ক্ষমতায় আসুক, তারা জুলাই চেতনাকে ধারণ করে দেশ পরিচালনা করবেন। দুর্নীতিমুক্ত, জবাবদিহিমূলক হবে রাষ্ট্র। নিজের রাজনৈতিক চেতনার চেয়ে দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে। সবার ঊর্ধ্বে দেশকে এবং দেশের জনগণকে যেন আমরা রাখি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। তিনি প্রশ্নোত্তর পর্বেরও সমন্বয় করেন। কনস্যুলেট জেনারেল আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রশ্ন করা নিয়ে হট্টগোল শুরু হয়। এক পর্যায়ে বিশৃঙ্খলা শুরু হলে সভা শেষ না করেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম । রাষ্ট্রীয় সফরে মাহফুজ আলম আগামী ২৭ তারিখ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে থাকবেন।