বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল সোমবার বেলা ২টায় আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকাস্থ দূতাবাসের চার্জ দ্যা এ্যাফেয়ার্স এ্যাম্বাসডর মিস. ট্রেসি এ্যান জ্যাকবসন এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দূতাবাসের কর্মকর্তা মি. জেমস স্টুয়ার্ট। এ সাক্ষাৎকার অত্যন্ত আন্তরিকতা ও হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি সাইদা রুম্মান, মহিলা বিভাগের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য প্রফেসর ডা. হাবিবা চৌধুরী সুইট, কেন্দ্রীয় মহিলা বিভাগের মজলিশে শূরা সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. আমিনা রহমান ও আমীরে জামায়াতের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান।

সাক্ষাৎকার শেষে ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশেষ করে রিফর্মস, নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং কোনো সিকিউরিটি থ্রেট আছে কিনা তা জানতে চেয়েছেন। আমাদের এ অঞ্চলে যে সিকিউরিটি থ্রেট আছে সেব্যাপারে উনারা আমাদের স্টান্ডিং জানতে চেয়েছেন। টেররিজমের ব্যাপারে আমাদের ভিউজ এবং বাংলাদেশের পজিশন জানতে চেয়েছেন। আমরা এসব বিষয়ে তাদেরকে অবহিত করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা ক্লিয়ার বলে দিয়েছি যে, আমরা একটা ফেয়ার ইলেকশন চাচ্ছি। আমরা বেসিক রিফর্মস চাই। বাংলাদেশে আর যেন কোনো দুর্বৃত্তায়ন ও চাঁদাবাজির রাজনীতি ফিরে না আসে সেব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স ভূমিকায় আছি। আমরা করাপশন ফ্রি একটা বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমাদের অলওয়েজ ডেমোক্রেসির পক্ষে স্টান্ডিং রয়েছে। আমরা এটাও বলেছি যে, আমাদের ফরেন পলিসি হলো সকলের সাথে বন্ধুত্ব এবং কারো সাথে শত্রুতা নয়। একটা জেনারেশনাল স্টান্ডার্ড অব থিউরী এবং থিম যেভাবে কাজ করে, আমরা সেভাবেই কাজ করতে চাই- উইথ মিউচুয়াল রেসপেক্ট আন্ডারস্টাডিং এন্ড কমিউনিকেসন্স। আমরা এটাও বলেছি যে, সকল নেইবরিং কান্ট্রির সাথে কনজেনিয়াল এটমোসফিয়ার-এ গুড নেইবারহুড-এর যে প্রিন্সিপল অ্যান্ড পলিসি আছে উইথ সিকিউরিট অ্যান্ড রাইটস আমরা সেটাতে বিশ্বাস করি। মৌলিকভাবে এই কয়েকটি বিষয়ের উপর আলোচনা হয়েছে।

এটাও আলোচনা হয়েছে যে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সাথে তাদের সম্পর্ক আরও বেটার হবে এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাথে আগেও তারা কাজ করেছেন এবং আগামীতে আরও বেশি ক্লোজলি কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আমীরে জামায়াত একটি বিষয় তাদেরকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন, সেটা হলো ট্যারিফ সম্পর্কে। আমেরিকা আমাদের ব্যবসার উপর ৩০% ট্যারিফ বসিয়ে দিয়েছে; যেটা আমাদের দেশের স্পেশালি গার্মেন্টস সেক্টরকে সাংঘাতিকভাবে এ্যাফেক্ট করবে। আমীরে জামায়াত এ্যাম্বাসডরের মাধ্যমে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এবং গভর্ণমেন্টকে স্পেশাল অনুরোধ করেছেন, এব্যাপারে যেন কনসিডার করেন যাতে ট্যারিফ কমিয়ে দিয়ে একটা সহনীয় পর্যায়ে এনে বাংলাদেশের গার্মেন্টস এবং অন্যান্য এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড যে সমস্ত গুডস আছে সেগুলো আমরা অব্যাহত রাখতে পারি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওভারঅল আমাদের সিকিউরিটি ইস্যু, ল’ ইস্যু এবং ইলেকশনের জন্য যে প্রস্তুতি, ফেয়ার করার জন্য যেসব এ্যারেজমেন্ট, রিফর্মস আছে সে সম্পর্কে আলোচনা হয়।

আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বরেন, বিশেষ কোনো দেশের ব্যাপারে আমাদের কথা হয়নি। আঞ্চলিক ইস্যুতে তো আমাদেরও কনসার্ন আছে। যেখানে পারস্পরিক সহযোগিতা করা সম্ভব এবং প্রয়োজন সেখানে আমরা পারস্পরিক সহযোগিতা করার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছি।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস করা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ডা. তাহের বলেন, এব্যাপারে আমাদের অবস্থান খুব ক্লিয়ার। মানবতাবিরোধী, আমাদের কালচার বিরোধী, আমাদের ধর্মীয় অনুশাসন বিরোধী যদি কোনো কিছু থাকে তাহলে অবশ্যই আমরা এটার বিরোধিতা করব এবং আমরা বিরোধিতা করছি। যদি পজেটিভ হেল্প করার জন্য এটা এক্সপানশন হয় তাহলে তো ইটস ওকে। এজন্য আমাদের স্ট্যান্ড কে ক্লিয়ারলি অবজারভেশনে রেখে আমরা আমাদের ভূমিকা নির্ধারণ করব।

উল্লেখ্য, সৌজন্য বৈঠকের এক পর্যায়ে মহিলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে এ্যাম্বাসডরকে একটি জামদানি শাড়ি উপহার দেওয়া হয়।