গল টেস্টে ভালোই জবাব দিচ্ছে স্বাগতিক শ্রীলংকা। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে করা ৪৯৫ রানের জবাবে গতকাল ৪ উইকেটে ৩৬৮ রান তুলেছে লংকানরা। তৃতীয় দিন শেষে তারা পিছিয়ে মাত্র ১২৭ রানে। হাতে আছে ৬ উইকেট। কামিন্দু মেন্ডিস ৩৭ আর ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ১৭ রানে অপরাজিত আছেন। গল টেস্টে প্রথম দুই দিনে দারুণ খেলেছে বাংলাদেশ। এই দুই দিনই নিজেদের প্রথম ইনিংসে দুই সেঞ্চুরিতে ব্যাটিং করে টাইগাররা। তবে গতকাল তৃতীয় দিনের ব্যাট করতে নেমে টেস্টের তৃতীয় দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে স্বাগতিকরা। তৃতীয় দিন শেষে অনেকটা ড্রয়ের পথেই এগোচ্ছে গল টেস্ট। বাংলাদেশের দুই সেঞ্চুরির জবাবে গতকাল শ্রীলংকার পক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন পাথুম নিশাঙ্কা। ডাবল সেঞ্চুরির পথেও ছিলেন এই ব্যাটার। তবে তাকে ডাবল সেঞ্চুরি করতে দেননি হাসান মাহমুদ। মাত্র ১৩ রানের জন্য ম্যাজিক ফিগার থেকে দূরে রইলেন এই ব্যাটার। তারপরও গল টেস্টে তৃতীয় দিন শেষে খুব একটা স্বস্তিতে নেই বাংলাদেশ। গতকাল ম্যাচের তৃতীয় দিনে ৯ উইকেটে ৪৮৯ রান নিয়ে ব্যাটিং শুরু করে বাংলাদেশ। এদিন সফরকারীরা ৩.৪ ওভার খেলে যোগ করে মাত্র ৬ রান। ফলে পাঁচশত রানের আগেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। ইনিংসের ১৫৪তম ওভারে আসিথা ফার্নান্দোর বলে নাহিদ রানা ০ রানে উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ হলে ৪৯৫ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। অপরপ্রান্তে ১৫ বলে ৭ রানে অপরাজিত থাকেন হাসান মাহমুদ। বাংলাদেশের ৪৯৫ রানের জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে শ্রীলংকা। দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানাকে বিরতি দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন শ্রীলংকার দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও লাহিরু উদারা। প্রথম উইকেটে ৪৭ রানের জুটি করেন দুই লঙ্কান ওপেনার। অবশেষে সেই জুটি ভাঙেন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ইনিংসের ১৩তম ওভারে লঙ্কান শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন টাইগার স্পিনার তাইজুল। ওভারের প্রথম বলে উদারাকে ফিরতি ক্যাচ বানান তিনি। ৩৪ বলে ২৯ রান করে সাজঘরে ফেরত যান লঙ্কান ওপেনার। ফলে দলীয় ৪৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলংকা। তবে দ্বিতীয় উইকেটে আবারও জুটি গড়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা। এই উইকেটে ১৫৭ রানের জুটি করেন পাথুম নিশাঙ্কা ও দিনেশ চান্দিমাল। অবশেষে লঙ্কানদের দেড়শতাধিক রানের জুটিটি ভাঙেন নাঈম হাসান। লঙ্কানদের ইনিংসের ৫২তম ওভারে ডানহাতি স্পিনার নাঈমের বলে লেগ স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ হন চান্দিমাল। ১১৯ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। দলীয় ২০৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় শ্রীলংকা। এরপর সেট হয়ে আউট হয়েছেন শেষ টেস্ট খেলতে নামা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। তাকে দুর্দান্ত এক ঘূর্ণি ডেলিভারিতে পরাস্ত করেন পার্টটাইম স্পিনার মুমিনুল হক। মুমিনুলের ডেলিভারি ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন ম্যাথিউজ। কিন্তু বল ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। তিনি বিদায় হন ৩৯ রানে। এতে ভাঙে ৮৯ রানের জুটি। পাথুম নিশাঙ্কা ডাবল সেঞ্চুরির অনেকটা কাছে চলে এসেছিলেন। তবে ৮৫তম ওভারেই দারুণ এক ডেলিভারিতে নিশাঙ্কাকে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। ২৫৬ বলে ১৮৭ রানের ইনিংসে ২৩টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কা হাঁকান নিশাঙ্কা। আর দলীয় ৩৩১ রানে চতুর্থ উইকেট খোয়ায় স্বাগতিকরা। কামিন্দু ৩৭ ও ধনাঞ্জয়া ১৭ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের পক্ষে হাসান-তাইজুল-নাইম ও মোমিনুল ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ৯৩ ওভারে ৩৬৮/৪ (নিসাঙ্কা ১৮৭, ডি সিলভা ১৭অপ, কামিন্দু ৩৭অপ, উদারা ২৯, চান্ডিমাল ৫৪, ম্যাথুজ ৩৯), শ্রীলঙ্কা ১২৭ রানে পিছিয়ে।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৫৩.৪ ওভারে ৪৯৫/১০ (হাসান ৭*; তাইজুল ৭, জাকের ৮, নাঈম ১০, লিটন ৯০, এনামুল ০, সাদমান ১৪, মুমিনুল ২৯, শান্ত ১৪৮, মুশফিক ১৬৩, নাহিদ ০)।