স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুঃখ প্রকাশ

নিয়মিত পাঁচ/সাত হাজার মানুষের পদচারণায় সরগরম থাকা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এখন পিনপতন নীরবতা। হাসপাতালটির প্রধান দুটি ফটক বন্ধ। ভেতরে অলস সময় কাটাচ্ছে পুলিশ। সকাল থেকে হাসপাতালটিতে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা ফিরে যাচ্ছেন। চতুর্থ দিনের মতো শনিবার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে সেবা বন্ধ।

স্বপন নামের একজন তার ছেলে আলামিনকে নিয়ে এসেছিলেন। প্রধান ফটকের সামনে কিছুক্ষণ থেকে চলে গেছেন। জানা গেছে, হাসপাতালটির সব সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ভেতরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শতাধিক যোদ্ধা অবস্থান করছেন। শুধু তাদের রান্নার জন্য দু’একজন লোক আছে। এর বাইরে হাসপাতালের কোনো স্টাফ নেই।

এদিকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (এনআইও) পরিস্থিতির বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তাদের বক্তব্য জানিয়েছে। গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বক্তব্য জানায় মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসাইন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসকসহ অন্যান্য সেবাদানকারীরা গত ২৯ মে হাসপাতাল অভ্যন্তরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দুর্ভাগ্যজনক এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সব সেবাদানকারী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিধায় গত ২৯ মে থেকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় ভর্তি থাকা অধিকাংশ রোগী হাসপাতাল ত্যাগ করেন। বর্তমানে কেবল জুলাই যোদ্ধারাই হাসপাতালে অবস্থান করছেন। সব সেবা বন্ধ থাকলেও, জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের লক্ষ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের পথ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে সারাদেশ থেকে আগত চক্ষু রোগীদের চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা সেবাবঞ্চিত সব রোগীর প্রতি আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।

একই সঙ্গে অচলাবস্থা নিরসনে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়েছে। প্রতিনিধিদলটি আহতদের সঙ্গে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ অন্যান্য সেবাদানকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা করছেন। এ মুহূর্তে আমরা আলোচনার একটি ইতিবাচক ফলাফলের প্রত্যাশায় আছি।

চিকিৎসাসেবার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত হলেই ওই হাসপাতালের সব ধরনের চিকিৎসাসেবা পুনরায় চালু করার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসময়ে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা হিসেবে চক্ষু চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এমন রোগীদের কাছের হাসপাতালের চক্ষুবিভাগে চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।