মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও অন্যান্য মন্ত্রী-এমপিসহ ৪৫ আসামির বিরুদ্ধে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশনের পক্ষে সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্য হলেন বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রাষ্ট্রপক্ষে গতকাল শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে, আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে সময় আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পরে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১৯ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এদিন সকাল সোয়া ১০টার পর কেরানীগঞ্জ, কাশিমপুর ও নারায়ণগঞ্জ কারাগার এবং বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কড়া নিরাপত্তায় তাদের আনা হয়।
আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী ও সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাংগীর আলম এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান।
গতকাল ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় বসা অবস্থায় আসামিদের একে অপরের সঙ্গে গল্প করতে দেখা যায়। সবাইকেই উৎফুল্ল দেখাচ্ছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কয়েকজন পলাতক থাকায় তাদের হাজির করা সম্ভব হয়নি।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি নিয়ে হাসানুল হক ইনু বলেন, জুন মাসে কারাগারে তার ভয়েস পরীক্ষা করা হয়েছে অথচ আদালতের আদেশ দেখানো হয়নি। এটি অসৎ উদ্দেশে করা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
আদালত বলেন, আপনার কিছু বলার থাকলে লিখিত আবেদন করেন, আমরা দেখব। এ সময় চিফ প্রসিকিউটর বলেন, একটি রেকর্ড ফরেনসিক করতে গিয়ে তার (হাসানুল হক ইনুর) ভয়েস পরীক্ষা করতে হয়েছে। এই বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের আদেশ ছিল। হাসানুল হক ইনু বলেন, আমাকে আদেশ দেখানো হয়নি।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আসামির আইনজীবী থাকার পরও তিনি আদালতে এভাবে কথা বলতে পারেন না। এ সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, আমরা ন্যায়বিচারের স্বার্থে যে কারও বক্তব্য শুনতে পারি। এরপরে আদালত এ সংক্রান্ত বিষয়ে ১৫ অক্টোবর পরবর্তী দিন ধার্য করে আদেশ দেন।