আজ ১১ জুলাই শুক্রবার। ২০২৪ সালের এই দিনটা ছিল বৃহস্পতিবার। কোটা সংস্কার এবং ফ্যাসিস্ট তাড়ানোর আন্দোলনের বছর ১১ জুলাই আন্দোলনের শুরুর দিকে প্রথম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুলিশি হামলার শিকার হন। হামলার শিকার হয়ে তারা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। টিয়ারগ্যাস, লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ইত্যাদির আঘাতে সেদিন অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পুলিশের হামলায় আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীও। পুলিশের বর্বরোচিত হামলা ও বাধা উপেক্ষা করে সেদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ি বিশ্বরোড সংলগ্ন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রায় ৬ ঘণ্টা যাবৎ অবরোধ করে রাখে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেদিনের সাহসিকতা দেশব্যাপী আলোচিত হয়।

রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রাম এবং নোয়াখালী ও সিলেটের করিডোর বলা হয়ে থাকে কুমিল্লাকে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে যেসব আন্দোলন গড়ে উঠেছিল সেইসব আন্দোলনে কুমিল্লার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

১১ জুলাই পুলিশি হামলায় হাত ভেঙে যায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক মো. এমরানের। এই সমন্বয়ক জানালেন, সর্বপ্রথম হামলা হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর এবং এই জায়গা থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়।

স্বৈরাচার পুলিশ বাহিনী সেদিন আমাদের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছিল, যা সমগ্র বাংলাদেশ দেখেছিল। আমিসহ অসংখ্য কুবি শিক্ষার্থী আহত হয়েছিল। হামলার পর সারা বাংলাদেশে সকলের কণ্ঠে আওয়াজ ছিল,কুবিতে হামলা কেন প্রশাসন জবাব চাই! আমার ভাই আহত কেন প্রশাসন জবাব চাই! জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক মুহাম্মদ সাকিব হুসাইন বলেন, ‘১১জুলাই বিপ্লবে সারা বাংলাদেশে প্রথম হামলা কুমিল্লায় হয় এবং প্রথম প্রতিরোধও কুমিল্লা থেকে শুরু হয়। সেদিন আমরা রাত ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ঢাকা চট্টগ্রাম ব্লকেড করেছিলাম। হামলার পর ঢাকা থেকে হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সার্জিস আলম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যান। পরে আমরা তিনজন কুমিল্লার এসপির সঙ্গে এ বিষয়ে অভিযোগ করি এবং আলোচনা হয়। এমনকি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও এ হামলার প্রতিবাদ জানায়।

আন্দোলনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় ঢাকায় আন্দোলনের পরিধি বাড়তে থাকে। সেদিন বিকালে কর্মসূচি দিয়ে শাহবাগ অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। কর্মসুচিতে উপস্থিতি ছিল ব্যাপক এবং বিপুল সংখ্যক। বলা যায় টার্নিং পয়েন্টে আন্দোলন। ছাত্রনেতাদের কপালে চিন্তার ভাজ পড়ে যখন সাপ্তাহিক ছুটির দিন কড়া নাড়ে। শুক্র ও শনিবার, এই দুইদিন ছুটির কারণে এই শঙ্কা তৈরি হয় যে, সরকার চাইলে ছুটির দিনকে ব্যবহার করে আন্দোলন দমিয়ে দিতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে পারে। সরকার দাবি না মেনে যদি হামলা-মামলা করে যায় তাহলে কি করা হবে। সেদিন এরকম দোদুল্যমানতায় ছিল নাহিদ-আসিফ-বাকেররা। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত হয় ভিন্ন রকমের। ক্রাইসিস মোকাবেলা করে আন্দোলন জনগণের হাতে তুলে দেওয়ার। সিদ্ধান্ত হয় ভিন্ন রকমের কৌশল করা হয় নতুন করে। ১১ তারিখ নাহিদ ইসলাম ঘোষণা করেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-মামলা হলে আন্দোলন কঠোর থেকে কঠোরতর হবে। এমন কি হরতাল-অবরোধের ডাক দেওয়া হবে। যা পরবর্তীতে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা হয়। জনগণ জানে হরতাল অবরোধ মানে কী? এটা তো শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। ফলে হরতাল মানে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের আহবান। তখন এটা আর ক্যাম্পাসের বা ছাত্রদের আন্দোলন থাকে না। তার এই বক্তব্যের মধ্যেই কিন্তু গণআন্দোলনের ইশারা ছিল। ১১ জুলাই দশটা-এগারোটার দিকে ঢাকায় খবর আসে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর প্রক্টরের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢুকে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতৃত্বে নির্বিচারে হামলা করা হয়েছে। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক ঢাকা কলেজের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা। মিছিল সায়েন্সল্যাবে যাওয়া মাত্রই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাধা দেয়। পরে নীলক্ষেতে কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। এক দফা দাবি আদায়ে এদিন বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। এদিন সকাল থেকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, পুলিশ, ছাত্রলীগ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে বলা হয়, কোটা নিয়ে আপিল বিভাগের আদেশের পর শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়া উচিত।

এদিন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীদের বিরত থাকতে হবে। ব্লকেড কর্মসূচির নামে রাস্তায় নামলে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় পুলিশ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে যান শিক্ষার্থীরা। এর আগে থেকেই পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়। আন্দোলনকারীরা যাতে শাহবাগ থেকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের দিকে যেতে না পারে, সেজন্য রাস্তায় ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। সেখানে জলকামান ও সাঁজোয়া যান প্রস্তুত রাখা হয়।

আন্দোলনকারীরা জানান, শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মিছিল শুরু করলে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের বলা হয়, শাহবাগে ব্যারিকেড অতিক্রম করলে পুলিশ ‘অ্যাকশনে’ যাবে। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সেই ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ মেট্রো স্টেশনের নিচে অবস্থান নেয়। তখন পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীরা ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘ভয় দেখিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘হামলা করে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘ কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।

এদিন ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটকের সামনে বিকাল ৪টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে ১০ শিক্ষার্থী আহত হন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল ফটকে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগে যান। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিকেল ৪টার দিকে মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন এবং সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।

এদিন আন্দোলনরত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে সাতজন আহত হন। পরে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর ২ নম্বর গেটে এসে সড়ক অবরোধ করেন।

সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিকেল ৪টার দিকে ক্যাম্পাসের গোলচত্বর থেকে মিছিল বের করে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করতে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করলে পাঁচজন আহত হন। এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-রাজশাহী রেলপথ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খুলনার জিরো পয়েন্ট, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যশোর-রাজশাহী মহাসড়ক এবং গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া সড়ক অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করেন। এছাড়াও পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এদিন সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে উপাচার্যদের চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এ চিঠি পাঠানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দেয়ার চেষ্টা চলছে।’

১১ জুলাই শিক্ষার্থীদের সতর্ক করেন তৎকালীন (স্বৈরাচার হাসিনার) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের সীমা লঙ্ঘন (লিমিট ক্রস) করছে। অনাকাক্সিক্ষত কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে পুলিশ বসে থাকবে না। কামাল আরও বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীরা একই কাজ করছেন। এরই মধ্যে প্রধান বিচারপতি একটা নির্দেশনা দিয়েছেন, তাতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত হয়েছে। চলমান মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত তা স্থগিত থাকবে। ছাত্রদের তা বোঝা উচিত। রায় যখন নেই তাহলে আন্দোলন করছে কেন? তাদেরও আত্মীয়স্বজনকে বিভিন্ন কাজে ছুটতে হয়। হাসপাতালে যেতে হয়, চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। রাস্তা বন্ধ করে দিলে কীভাবে চলবে? তাদের দাবির প্রতি সরকার খেয়াল রাখছে। যেহেতু বিষয়টি কোর্টে আছে, সেহেতু তা কোর্টের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে।

একইদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা জনজীবনকে জিম্মি করে আইনি পন্থায় না গিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করছে। তিনি বলেন, এটি অনভিপ্রেত ও সম্পূর্ণ বেআইনি। তিনি বলেন, আগের দিন, শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরে সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি সম্মান রাখার আহ্বান জানিয়েছিলাম। জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে, তা পরিহারের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, বিষয়টি নিয়ে যখন বিজ্ঞ আদালতের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে, তার প্রতি কোনো রকম সম্মান প্রদর্শন না করে তথাকথিত বাংলা ব্লকেডের কর্মসূচি দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।

সুপ্রিমকোর্টকে পবিত্র সংবিধানের অভিভাবক বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এই সংবিধানই দেশের সর্বোচ্চ আইন। সর্বোচ্চ আদালত যখন সরকার পক্ষ, আন্দোলনকারী ও মামলাকারী সবার বক্তব্য শুনে এই বিষয়ের চূড়ান্ত বিচারিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে আন্দোলনের নামে জনগণের চলাফেরায় বাধা সৃষ্টি বেআইনি। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ইতিমধ্যে আন্দোলনকারীদের অনেকে সামাজিক মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। আন্দোলনকারীরা জনজীবনকে জিম্মি করে আইনি পন্থায় না গিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করছে, যা অনভিপ্রেত ও সম্পূর্ণ বেআইনি।

তারুণ্যের শক্তি এবং আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কিন্তু এই শক্তি ও আবেগকে পুঁজি করে কোনো অশুভ মহল যদি দেশে অরাজক পরিস্থিতি ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়, তাহলে সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যারা কোটা আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দিতে চায়, তাদের খায়েশ পূরণ হতে দেব না। আমরা পরিষ্কার বলেছি, এই আন্দোলনকে কেউ যদি রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলতে চায়, সেটাকে আমরা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করব। ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো কোনো অশুভ মহল ছাত্রছাত্রীদের আবেগকে পুঁজি করে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করছে।