গত সোমবার থেকে টানা বৃষ্টিতে দেশের কয়েকটি জেলা তলিয়ে গেছে। শুরু হওয়া বৃষ্টি দেশের প্রায় সকল বিভাগেই চলমান। কোনো কোনো অঞ্চলের নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফেনীতে ২২২ মিলিমিটার, পটুয়াখালীতে ১১০ মিলিমিটার, মাইজদীকোর্টে ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। এর আগের দিন সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজারে, ১৫৭ মিলিমিটার। চট্টগ্রামের হাতিয়া, সন্দ্বীপ, ফেনী; খুলনার মোংলা এবং বরিশালের পটুয়াখালী ও খেপুপাড়াতেও একশো মিলিমিটারের বেশি পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। আরও বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয়তার কারণে আজ সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। আর অতি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। সেই সাথে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশে সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বন্যা প্রবণ সময় হিসেবে ধরা হয় এবং এদেশের প্রেক্ষাপটে জুলাই হলো সবচাইতে বেশি বৃষ্টিপ্রবণ মাস। ফলে, এই সময়ে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং নদীগুলোর পানি ধারণক্ষমতা বেড়ে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়।
গত বছরও ওই সময়ের মাঝেই অর্থাৎ আগস্টে নজিরবিহীন বন্যা হয়েছিল দেশে। তখন দেশের বিভিন্ন জেলায় কয়েক লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রাণহানিও হয়েছে।
গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশের এলাকায় এই মুহূর্তে একটি লঘুচাপ অবস্থান করছে। এই লঘুচাপের কারণেই মৌসুমি বায়ু এখন বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সক্রিয়, অন্যান্য জায়গায় মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। মৌসুমি বায়ুর বর্ধিতাংশ এখন রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্তও বিস্তৃত। ফলে, দেশের সকল বিভাগের কোথাও না কোথাও এখন হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে এই বৃষ্টিকে ‘স্বাভাবিক’ উল্লেখ করে আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা মঙ্গলবার জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত বন্যার শঙ্কা দেখা যাচ্ছে না। কারণ বৃষ্টি আমাদের উত্তর দিকে হচ্ছে না, পশ্চিম দিকে হচ্ছে। তাই, বন্যার প্রবণতা কম।
বাংলাদেশে বন্যার শঙ্কা কতটা ভারতের হিমাচল প্রদেশে প্রবল বৃষ্টি ও বন্যার কারণে গত ২০ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। তবে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই) বলছে, গত ছয় দিনে টানা বৃষ্টির কারণে হিমাচল প্রদেশে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে এ পর্যন্ত প্রায় ১৪ জন মারা গেছে, ২৮ জন নিখোঁজ রয়েছে ও পাঁচ জন আহত হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বিবিসিকে বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হলেও প্রধান নদীগুলোর পানি বিপদসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাই, আগামী তিন দিনে বন্যার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে না।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সর্বশেষ পূর্বাভাসেও জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, সাঙ্গু, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, এসব নদীর পানির মাত্রা আগামী এক দিন বৃদ্ধি পেয়ে পরে স্থিতিশীল হতে পারে।
টানা বৃষ্টিতে ফেনীর নি¤œাঞ্চল প্লাবিত
ফেনী সংবাদদাতা : মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে দুইদিন যাবত একটানা প্রবল বর্ষণে ফেনীর নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। এটা ছিল মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় ৩৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।পাউবো’র উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কালাম জানিয়েছেন, ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনো বিপদসীমার নিচে রয়েছে। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সন্ধ্যা নাগাদ বিপদসীমার উপরে উঠতে পারে নদীর পানি। ফেনী শহরের এস এস কে সড়ক, একাডেমী রোড, শাহিন একাডেমী রোড, শান্তি কোম্পানির রোড, উকিল পাড়া, মাস্টার পাড়া, পেট্রোল বাংলা, বনানী পাড়া সহ প্রায় প্রতিটি সড়ক ও অলিগলি পানির নিচে রয়েছে। শহরের প্রধান সড়ক এস এস কে সড়কে কোমর সমান পানি বিরাজ করছে।
এদিকে ফুলগাজী উপজেলার ফুলগাজী বাজারে মুহুরি নদীর বাঁধ ভেঙে বাজারের পশ্চিম পাশের শ্রীপুর সড়ক সহ কয়েকটি দোকান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অবৈধভাবে অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের ফলে এখানে দ্রুত ভেঙে গেছে বলে স্থানীয়রা জানান।
ফেনী শহরের দমদমা খাল, পাগলী ছড়া ও খাজা আহমদ লেক ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টিতে দ্রুত নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার প্রধান কারণ বলে পৌরবাসী অনেকে জানিয়েছেন। এছাড়া অপরিকল্পিত ড্রেনেজ সিস্টেমের কারণেও বন্যা সৃষ্টি হয়।
টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে কয়েকটি জেলা
গতকাল মঙ্গলবার সকল পরীক্ষা স্থগিত করে জেলার সব স্কুল মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাসা বাড়িতে পানি ঢোকার কারণে শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় গত বছরের ভয়াবহ বন্যার সংখ্যায় আতঙ্কিত ফেনীবাসী।
ফুলগাজীতে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে দোকান ও রাস্তা নদীতে
ফেনী জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যার ফলে আবারো ফুলগাজী উপজেলায় সদর ইউনিয়নের শ্রীপুরে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে রাস্তা সহ ৩ টি দোকান নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ৮ জুলাই সকাল থেকেই নিলক্ষ্মী-গাবতলা সড়কটি বন্ধ রয়েছে এবং পুরো শহর জুড়ে জলবদ্ধতায় জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়দের সাথে নিয়ে ভাঙন স্থান পরিদর্শন করেন ফুলগাজী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ আবুল হোসেন ও সদর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর আবুল কালাম শামীম।
তারা অতিদ্রুত সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় বেড়ীবাঁধটি রক্ষায় ব্যাবস্থা নিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহরিয়া ইসলাম জানান, আমি ভাঙন স্থান পরিদর্শন করেছি এবং যেসকল ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে জিও ব্যাগ স্থাপন বা জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন তা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছি। তবে রাস্তা সহ দোকান ধসে পড়া স্থানে অস্থায়ী সমাধান প্রযোজ্য নয়, সেখানে প্রয়োজন টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মাণ।
উল্লেখ্য গত ৩০ জুন ফুলগাজীতে বেড়িবাঁধ পরিদর্শনে দুর্যোগ ও ত্রান মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফিজুর রহমান জানান, ২৪ ‘এর ভয়াবহ বন্যা পরবর্তী পানি উন্নয়ন বোড সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয় মুহুরি নদী সংস্কারে, বর্তমানে নদীর পানি বিপদসীমার অনেক নীচ দিয়ে প্রভাহিত হওয়া স্বত্বেও বারবার বাঁধ ভাংগনে জনমনে আতংক বিরাজ করছে।
ফেনীতে মুহুরী ও সিলোনীয়া নদীর পানি বিপদসীমার উপরে
ফেনীতে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং সিলোনীয়া নদীর পানি বিপদসীমার ২২সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।বিকেল পাঁচটায় পাউবো সূত্রে জানা গেছে।আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে দাগনভূঞা উপজেলা ছাড়া জেলা পাচটি উপজেলাই বন্যা কবলিত এবং এবারের এই বন্যা শুধু মাত্র বৃষ্টির পানি সৃষ্ট। ফেনী সীমান্তের ওপারে ত্রিপুরাতেও প্রবল বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে।উজানের সেই পানি যদি মুহুরী ও কহুয়া নদীতে চাপ সৃষ্টি করে তাহলে ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।এমনকি কেউ কেউ ধারনা করছেন যে অবস্থা সেরকম হলে গত বছরের চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে পারে এবারের অবস্থা।
জেলা প্রশাসন জরুরী ত্রান সামগ্রী মজুত রেখেছে।ডিসি সাহেব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেনীবাসিকে অভয় এবং নানা দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। জেলা জামায়াতের আমীর শহরের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং স্থানীয় জনগনকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
ভারী বর্ষণে পাহাড় ধস ও পানিবদ্ধতার শঙ্কা ॥ সতর্ক চট্টগ্রাম প্রশাসন
চট্টগ্রাম ব্যুরো : দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়ে ওঠায় চট্টগ্রামসহ চারটি বিভাগে টানা ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই বৃষ্টিপাত আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে পাহাড়ি এলাকা ও নিচু অঞ্চলগুলোতে পাহাড়ধস ও পানিবদ্ধতার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় টানা বৃষ্টি শুরু হয়, যা সারাদিন স্থায়ী ছিল।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, “উত্তর বঙ্গোপসাগরে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বর্তমানে সক্রিয়। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে দীর্ঘস্থায়ী বৃষ্টিতে পাহাড়ধসসহ নানাবিধ দুর্যোগের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।”
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জানান, নগরীর অনেক সড়ক উঁচু হলেও সংযোগ সড়কগুলো নিচু হওয়ায় জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। তার ভাষায়, “ড্রেন যতবারই পরিষ্কার করা হোক না কেন, নিচু লেভেলের কারণে পানি আটকে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে মেয়র মহোদয়ও উদ্বিগ্ন। প্রকৌশল বিভাগকে দিয়ে সড়কের লেভেল ঠিক করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, যেসব এলাকায় পানি জমার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে ড্রেনেজ লাইন পরিষ্কার করা হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনের টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং যেকোনো মুহূর্তে পানি জমার সংবাদ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে থাকা এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকায় মাইকিং চালানো হচ্ছে এবং জোনভিত্তিক কমিটি করে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং কার্যক্রমের সার্বিক তদারকি চলছে।”
এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড়ি এলাকায় অপ্রয়োজনে চলাচল না করা এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
হাটহাজারীতে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা : চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় কয়েকদিনের টানা বর্ষণে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক ও দিনমজুররা।
ধলই, গুমানমর্দ্দন, ফরহাদাবাদ ও মির্জাপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে সড়কপথে সৃষ্টি হয়েছে পানিবদ্ধতা। অনেক কাঁচা ও পাকা রাস্তা পানিতে তলিয়ে গিয়ে যান চলাচলে বিঘœ ঘটছে। কোথাও কোথাও সড়কে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত, যা জনসাধারণের চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
টানা বৃষ্টির ফলে কৃষকদেরও পড়তে হচ্ছে বিপাকে। গত বছর এ সময়ে ধানের বীজতলা ডুবে গিয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল অনেককে। তাই এবার কৃষকরা আগেভাগেই উঁচু জমিতে বীজতলা তৈরির চেষ্টা করছেন। তবে পর্যাপ্ত উঁচু জায়গা না থাকায় সমস্যায় রয়েছেন অনেকেই।
ছিপাতলীর একজন কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন টানা বৃষ্টিতে রাস্তা ঘাট ডুবে যাওয়ায় চলাচলের খুব কষ্ট হচ্ছে আর একটু বেশি বৃষ্টি হলে পানি ঘরে ডুকতে পারে,বন্যা হওয়ার আশংকা রয়েছে।
এছাড়া, মাঠের সবজিক্ষেতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কুমড়া, শসা, মরিচ, পটলসহ বিভিন্ন মৌসুমি সবজি পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি বাড়ছে।
অন্যদিকে দিনমজুর, রিকশা চালক ও খেটে খাওয়া মানুষজন বৃষ্টির কারণে কাজ হারিয়ে পড়েছেন চরম দুর্দশায়। অনেকেই সকাল থেকে কাজের আশায় বের হলেও কাজ না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন।
বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।