জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, জনগণ চাইলে অবশ্যই পিআর পদ্ধতি মানতে হবে। এই দাবি নিয়ে মাঠে থাকবে জামায়াত। পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নেবে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে কোনো সমস্যা নাই। তবে এখনও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি। নির্বাচনের জন্য যে শর্ত এবং দাবিগুলো আমরা দিয়েছি সেগুলো এনশিউর করেই নির্বাচনে যেতে হবে সরকারকে। তাহলে আমরা প্রতিশ্রুতি দিতে পারি নির্বাচন হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুর রহমান মূসা।

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়া নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। এমনকি এ বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন হলেও জামায়াতের আপত্তি নেই। আমাদের পক্ষ থেকেই ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে নির্বাচনের টাইমলাইন দেওয়ার দাবি করা হয়েছিল।

জামায়াতের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য যে শর্ত এবং দাবিগুলো আমরা দিয়েছি সেগুলো এনশিউর করেই নির্বাচনে যেতে হবে সরকারকে। তাহলে আমরা প্রতিশ্রুতি দিতে পারি নির্বাচন হবে। অন্যথায় নির্বাচন হবে না। আমরা অন্যান্য দাবির সঙ্গে একটা কথা জোরালোভাবে বলছিÑসবার সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) তৈরি করতে হবে, যেটা এখনো অনুপস্থিত আছে। ভোটের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনো দৃশ্যমান নয়। সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। যেটা এখনো অনুপস্থিত। আমাদের এ উদ্বেগ নিরসনে কাজ করা হচ্ছে বলে ইসি আশ্বস্ত করেছে।

তিনি বলেন, ‎সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের বিষয়ে সবার বক্তব্য আমলে নিতে আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচনে ‎সন্ত্রাস-অনিয়ম বন্ধ করতে হলে পিআর পদ্ধতিতে ভোট করতে হবে। সবাই সবকিছু নাও চাইতে পারে, তত্ত্বাবধায়কও অনেকে চায়নি। জাতির জন্য কল্যাণকর পিআর পদ্ধতির নির্বাচন।

এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, ‎জনগণ চাইলে অবশ্যই পিআর পদ্ধতি মানতে হবে। এই দাবি নিয়ে মাঠে থাকবে জামায়াত। পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নেবে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে কোনো সমস্যা নাই। তবে এখনও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি।

জামায়াতের সাংগঠনিক আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকার বিষয়ে একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, এর জবাবটা আপনিই দেন, আমরা ১৫ বছর কোথায় ছিলাম? এ নেতার ভাষ্য, হিসাব পদ্ধতিতে যদি যান আমার বাবা দাদার আমলে, হিসাব পদ্ধতিতে ব্যাংক একাউন্ট কাজ কত জনের ছিল? কোটি কোটি টাকার লেনদেন তো হয় দোকানগুলোয়। এখনও বাংলাদেশের একটা বিরাট নাম্বার আছে যে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই।

বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘গত ১৫ বছর আমরা বাড়িঘরে থাকতে পারি নাই। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে যাবো কেন? ব্যাংক একাউন্ট খুলতে যদি যেতাম আয়নাঘরে ঢুকতে হতো। ... সে কারণে যে রিটার্নটা আমরা এখন দিয়েছি সেখানে ব্যাংক উল্লেখ নেই। সামনে আগামী রিটার্নের সময় অবশ্যই পরিবেশ অনুকূল থাকলে আমরা এটা করব। হিসাবের যদি সিস্টেম আনেন যার যার মত হিসাব রাখতে পারে। ইলেকশন কমিশনও তার কোনো শর্ত আরোপ করে না যে ব্যাংক হিসাব খুলেই দলের হিসাব রাখতে হবে। এটা আমার দলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।

হামিদুর রহমান আযাদ জানান, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ভিত্তিতে ২০০৮ সালের যে রিটার্ন জমা দেওয়া হয়, সেখানে হিসাবের মধ্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট উল্লেখ ছিল। তিনি বলেন, ‘সে অনুযায়ী আমরা কাজ করেছি। কিন্তু এরপরে দেশে কী হয়েছে আপনারা জানেন, ব্যাখ্যার দরকার নাই।’