কার্যক্রমে মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে আশকোনা ক্যাম্প পর্যন্ত সরকারের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ঘুষ নিলে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, আমার মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি চলবে না। হজ্ব কার্যক্রমে কেউ যদি দুর্নীতি বা ঘুষ নেন তাদের ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হবে। এ বিষয়ে তিনি হজ¦¦ এজেন্সী মালিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পর্যায়ে হজ¦ ও ওমরাহ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হজ¦ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) উদ্যোগে আয়োজিত মেলা আগামী ১৬ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, উড়োজাহাজের ভাড়া কমাতে আমরা কাজ শুরু করেছি। বিমানসহ হজে যুক্ত অন্য কোনো এয়ারলাইন্সের সঙ্গে আমরা যখনই কথা বলবো তখন হাবের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি নিশ্চিত রাখবো, যেন তারা মতামত জানাতে পারেন।
তিনি বলেন, গত হজে কিছু এজেন্সি ঢাকা বিমানবন্দরের স্ক্যানার ফাঁকি দিয়ে যাত্রীদের কাছে জর্দা, তামাক সরবরাহ করেছে। এগুলো জেদ্দা বিমানবন্দরে গিয়ে ধরা পড়েছে। যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, এগুলো এজেন্সি তাদের সরবরাহ করেছে। আমাদের দেশে জর্দা খাওয়া অপরাধ না হলেও সৌদি আইনে তা মাদক হিসেবে গণ্য করা হয়। এতে আমরা লজ্জিত হই। একজন হাজির কেন জর্দা-তামাক নিতে হবে। এগুলো বাংলাদেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করছে।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, গত হজে জেদ্দা বিমানবন্দর দিয়ে ঢাকা ফেরার পথে এক এজেন্সি মালিক হজ¦যাত্রীকে দিয়ে দুই কেজি ৮০ গ্রাম স্বর্ণ পাচারের চেষ্টা করেছেন। পরে তা জেদ্দা বিমানবন্দরে ধরা পড়ে। এসব বিষয়ে হাবসহ সবাইকে সচেতন হতে হবে। দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করা যাবে না।
তিনি বলেন, কেবল শারীরিকভাবে সুস্থ ব্যক্তিদেরকেই হজের জন্য নিবন্ধন করাতে হবে। শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে কাউকে হজে নেওয়া যাবে না।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, অসুস্থ ও শারীরিক সক্ষমতা নেই এরূপ ব্যক্তিদেরকে হজে নেওয়া হলে সরকারকে বিব্রত হতে হয়, নানারূপ বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এজন্য শারীরিকভাবে অক্ষম ও দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরকে হজের জন্য ফিটনেস সার্টিফিকেট না দেওয়ার জন্য সিভিল সার্জনদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ও শারীরিক সক্ষমতাবিহীন ব্যক্তিদেরকে হজে না নেয়ার জন্য হজ¦ এজেন্সিগুলোকে অনুরোধ করেন।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, ২০২৫ সালে আমরা একটি সুন্দর হজ¦ উপহার দিতে পেরেছি। ইতোমধ্যে ২০২৬ সালের হজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০২৬ সালের হজ¦ গতবারের চেয়ে আরো উন্নত হবে।
তিনি বলেন, হাবের সঙ্গে আমার মন্ত্রণালয়ের কোনো বিরোধ নেই। আমরা পারস্পরিক সম্মান, মর্যাদা ও ভ্রাতৃত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতেও হজ¦যাত্রীদের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করে যাব। তিনি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হাবকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এ ছাড়া, তিনি হজ¦ এজেন্সির সঙ্গে হজ¦যাত্রীদেরকে চুক্তি সম্পাদন এবং হজ¦যাত্রীদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
উল্লেখ্য, তিন দিনব্যাপী এ মেলায় মোট ১৫৪টি স্টল রয়েছে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, হজ¦ এজেন্সি এবং হজ¦ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যাংকসমূহ এ মেলায় হজ¦ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রম ও তথ্যসেবা প্রদর্শন করছে। এছাড়া, হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের সুযোগও রয়েছে মেলার স্টলসমূহে। ১৬ আগস্ট বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ মেলা শেষ হবে।
হাবের সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ারের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে ধর্মসচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, ঢাকার সৌদি দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান ইব্রাহিম আবদুল্লাহ আল-আহমারী ও হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমদ মজুমদার বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।