সড়ক পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) জনবল সংকট নিরসন করে এটির সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। বিদ্যমান কাঠামো সংস্কার ও অগ্রাধিকার কর্মসূচি নির্ধারণ করে বিআরটিএর গ্রাহকসেবা আরও সন্তোষজনক করা উচিত। সংস্থাটির কিছু কাজ বেসরকারি খাতে দেওয়ার চিন্তাভাবনা থেকে নীতিনির্ধারকদের সরে আসা উচিত।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে একক মানবিক উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘বিআরটিএর গ্রাহকসেবা বিষয়ে নাগরিক সংলাপে’ বক্তারা এসব কথা বলেন। একক-এর নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াহেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সড়কখাতে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও বিভিন্ন পর্যায়ের সেবাগ্রহীতারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন- বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান, রোড সেফটি নেটওয়ার্কের সমন্বয়ক পাহাড়ি ভট্রাচার্য, সেবক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খান মো. বাবুল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ‘একক’-এর নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াহেদ।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম বলেন, বিআরটিএ’র মাধ্যমে সরকার যে পরিমান রাজস্ব পায়, তার কতটুকু সড়কখাতে জনস্বার্থে ব্যবহার হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা উচিত। কিছুদিন আগে বলা হয়েছিল, সেবা না বাড়লে সংস্থাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু আমরা বলেছি, সংস্থার দোষ কী? মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলে দেওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। বিআরটিএর সেবার ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, তদারকি বাড়াতে হবে ও ব্যবস্থাপনা ঠিক করতে হবে।

তিনি বলেন, এই সংস্থার অগ্রাধিকার কর্মসূচি ঠিক করা উচিত। একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এটির লক্ষ্য অর্জন হচ্ছে না। বিআরটিএ’র জনবল শতভাগ সক্রিয় করার ব্যবস্থা নিতে হবে। যানজট, চাঁদাবাজি, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে এই সংস্থার কর্ম পরিধি আরও উপযোগী করতে হবে। গ্রাহকরা টাকা দিয়ে সেবা পেতে চায়। হয়রানি দূর করতে সেবায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচিও বাড়াতে হবে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান বারবার পরিবর্তন করা হয়। দায়িত্ব ঠিকমতো বুঝে নেওয়ার আগে বা দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করা অবস্থায় চেয়ারম্যান পরিবর্তন হওয়ায় সংস্থার ধারাবাহিক কাজ ব্যাহত হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ বাস ও ট্রাক সড়ক থেকে সরানোর জন্য সংস্থাটি বারবার উদ্যোগ নিলেও কাজ হয়নি। কারণ স্ক্র্যাপ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়নি। এভাবে নানা ফাঁক থাকায় উদ্যোগ নিয়েও সংস্থা সফল হয়নি। এই সংস্থাকে এখনই ঢেলে সাজাতে হবে। গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণ যেমন বাড়াতে হবে, তেমনই তাদের সব দাবি ধীরে ধীরে পূরণ করতে হবে।

রোড সেফটি নেটওয়ার্কের সমন্বয়ক পাহাড়ি ভট্রাচার্য বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা বেড়েছে। সড়ক নিরাপদ করতে হলে আন্তঃমন্ত্রণালয় ও আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয় বাড়াতে হবে। এই খাতে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছাও জরুরি।