রোহিঙ্গা সংকট আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরতে কক্সবাজারে বড় পরিসরে রোহিঙ্গা সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ২৪ থেকে ২৬ আগস্ট তিন দিন এই সম্মেলন চলবে। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ২৫ আগস্ট এই সম্মেলনে যোগ দেবেন।

বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী আন্তর্জাতিক সংগঠন ও বিদেশি প্রতিনিধিদের কাছে তাদের সমস্যা, তাদের আশা-আকাক্সক্ষা এবং তাদের স্বপ্নগুলোকে তুলে ধরার সুযোগ পাবেন।

প্রেস সচিব বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুব আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এ বিষয়ে সরকার বিভিন্ন দেশ ও সংগঠনের সাথে নিবিড় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বড় পরিসরে তিনটি সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর প্রথমটি কক্সবাজারে আগামী ২৪ আগস্ট শুরু হচ্ছে। এই সম্মেলনগুলো আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্যে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে রোহিঙ্গা সংকট তুলে ধরা। তিনি জানান, চলতি বছর নিউইয়র্ক এবং দোহায় আরও দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সবচেয়ে বড় সম্মেলনটি আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হবে। কক্সবাজার সম্মেলনে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি, ৪০টি দেশের প্রতিনিধি, ঢাকায় অবস্থিত কূটনীতিক এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শফিকুল আলম আরও বলেন, ২৪ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। তিন দিনের এই সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন ও তহবিলের জন্য একটি বিস্তৃত রোডম্যাপের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। রাখাইন রাজ্যে পরিকল্পিত সহিংসতা ও নিপীড়ন এবং মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা তাদের আদি আবাসভূমি রাখাইন রাজ্যে ভয়াবহ সহিংসতার কারণে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, সরকারি এবং কূটনীতিক পাসপোর্টে পারস্পারিক ভিসা অব্যাহতি সুবিধা পেতে পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রেস সচিব বলেন, পাকিস্তানের মতো এ রকম চুক্তি আমরা আরও ৩১টি দেশের সঙ্গে করেছি। এই চুক্তি পাঁচ বছরের জন্য করা হবে । এর ফলে যারা অফিসিয়াল পাসপোর্ট এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন, তারা এখন বিনা ভিসায় পাকিস্তান সফর করতে পারবেন। একইভাবে পাকিস্তানের যারা অফিসিয়াল এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেনÑ তারাও বাংলাদেশে সফর করতে পারবেন কোন ভিসা ছাড়াই। এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস। উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, এ বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের সম্মতি পাওয়া গেছে।