জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ফেইসবুকে দুদক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির যে অভিযোগ তুলেছেন, সে বিষয়ে অনুসন্ধানে নামার কথা বলছে সংস্থাটি। গতকাল বৃহস্পতিবার কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো.আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকার জন্য আমরা অনেকবার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। এরপরও দেখেছি, এখনো অনেকে প্রতারকদের ফাঁদে পড়ছেন। আমাদের কাছে এমন চারটা জিডি রয়েছে, যারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রকৃত ঘটনা সামনে এলে হাসনাত আবদুল্লাহ বুঝতে পারবেন তিনি ভুল করেছেন।

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ সম্প্রতি এক ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা। আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও সেটার ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে ১ লাখ টাকা দিতে হবে। সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছে এই টাকা চাওয়া হয়েছে দুদকের ডিজি আকতার আর তার ডিডি পরিচয়ে। মাহমুদা মিতুকে বলা হয়, আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা পয়সার অভাব থাকার কথা না, আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান। এ পোস্টের সঙ্গে ভিডিও আকারে ওই চিকিৎসকের রেকর্ড করা ফোনালাপের তিনটি অডিও পোস্ট করেন হাসনাত।

মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে হাসনাতের এ পোস্টকে ‘যাচাই-বাছাইহীন’ ও ‘মানহানিকর’ বলে মন্তব্য করেছিল দুদক। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি পোস্ট কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। পোস্টটিতে তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়াই দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেন।

এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আক্তার হোসেন বলেন, একটা রাজনৈতিক দলের সংগঠক যে তথ্য পরিবেশন করেছেন, সে বিষয়ে আমরা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে জানিয়েছি। যিনি অভিযোগকারী ছিলেন, তার নম্বরে যোগাযোগ করেছে যে প্রতারক, সেই প্রতারকের নাম্বার থেকে এ ধরনের আরও চারটা ঘটনা ঘটেছে; সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করেছেন। এগুলো এখন আমাদের টিমসহ সংশ্লিষ্ট থানাগুলো তদন্ত করছেন। এটা যে প্রতারক চক্রের কাজ, সেটা আপনারা শিগগিরই জানতে পারবেন। সব তথ্য আমাদের হাতে এসেছে।

প্রতারণায় দুদকের কারো সংশ্লিষ্টতা মিললে আইনের আওতায় আনা হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যারা প্রতারণা করেন, তারা অনেক স্মার্ট। দুদকের চেয়ারম্যান পরিচয়ে ফেইসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ আইডি খোলা হয়েছিল। নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে অর্থ নেওয়া হয়েছিল। সেই ভুয়া দুদক চেয়ারম্যানসহ চারজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তারা রিমান্ডে আছেন।

কেউ দুদককে বিতর্কিত করতে চাইছে কিনা জানতে চাইলে আক্তার হোসেন বলেন, যে ঘটনা হাসনাত আবদুল্লাহ গণমাধ্যম বা সোশাল মাধ্যমে তুলে এনেছেন, সে বিষয়ে আমরা অনুসন্ধান করছি। আরও অনেক বিষয় এখানে আসবে।

কোন বিষয়টি আপনারা অনুসন্ধান করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেই ভিডিও ক্লিপস, সেই ভিডিও ক্লিপসের বিষয়ে আমরা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।