রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ; নিহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরুণ প্রদান, আহতদের সুচিকিৎসা, দুর্গতদের পুনর্বাসন এবং ঘটনার কারণ তদন্তে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

গতকাল বুধবার দেয়া বিবৃতিতে মহানগরী উত্তর আমীর বলেন, আমাদের দেশে প্রতি বছরই প্রভূত সংখ্যক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ব্যাপকভাবে প্রাণ ও সম্পদহানীর ঘটনা ঘটলেও ঘটনার পূনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেই। ফলে পুরান ঢাকার চুরিহাট্টা ও নিমতলী ট্রাজেডির ভয়াবহ স্মৃতি প্রতিনিয়তই আমাদেরকে বহন করতে হচ্ছে। কোন অগ্নিদুর্ঘটনার পর সরকার বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের ইতিবাচক তৎপরতা লক্ষ্য করা গেলেও এর কোন সফল পরিসমাপ্তি থাকে না। ফলে দেশে নিয়মিত বিরতিতে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে। সে ধারাবাহিকতায় গত ১৪ অক্টোবর রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনায় ১৬ জনের মর্মান্তিক প্রাণহানী সহ জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। তিনি মিরপুরে অগ্নিদুর্ঘটনায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে গভীর উদ্বেগ ও ঘটনার কারণ তদন্তে একটি বিচার বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনা মূলত দুর্ঘটনায়। তাই কোন দুর্ঘটনায় ধৈর্যহারা হলে চলবে না বরং আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা-বিশ্বাস, সবর ও সাহসিতার সাথে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তিনি অগ্নিদুর্গতদের কল্যাণে জামায়াতের অবস্থানের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে প্রত্যেক শহীদ পরিবারের জন্য ১ লাখ টাকার অনুদান ঘোষণা করেছেন। মূলত, জামায়াত অগ্নিদুর্গতদের দুর্দশা লাঘবে সম্ভব সবকিছুই করতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি দুর্ঘটনায় নিহতদের শাহাদাত কামনা করে মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে দোয়া করেন এবং দুর্গতদের দুর্দশা লাঘবে সরকার, রাজনৈতিক সংগঠন, দাতা সংস্থাসহ সমাজের বিত্তবান মানুষকে মুক্ত হচ্ছে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

মহানগরী আমীর বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অগ্নিদুর্ঘটনার প্রবণতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, অবকাঠামো নির্মাণে ইমারত বিধির ব্যত্যয় ঘটানো, প্রতিটি ইমারতে পর্যাপ্ত বর্হিগমন ও অগ্নিনির্বাপন সুবিধা না রাখা এবং অগ্নিনির্বাপনে সেকেলে পদ্ধতির কারণে আমাদের দেশে অগ্নিদুর্ঘটনা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে প্রতিবছর ব্যাপক জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। তাই আগামী দিনে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে পরিকল্পিত নগরায়ন, নির্মাণকাজে ইমারতবিধির যথাযত অনুসরণ এবং অগ্নিনির্বাপনে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যাবহার নিশ্চত করা জরুরি। অন্যথায় অগ্নিদুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।