# ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে ইরানে জনতার বিক্ষোভ

# হামলা বন্ধ না হলে আলোচনা নয় : ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

# বেসামরিক পরমাণু স্থাপনায় হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন : সৌদী

ইরান ও ইসরাইলের মাঝে টানা ৭ম দিনের মতো হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ১৩ জুন ইসরাইলের হামলার মাধ্যমে শুরু হওয়া এই সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনা তৈরি করেছে। আঞ্চলিক এই সংঘাতে বিশ্বের পরাশক্তি দেশগুলোও জড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশ্বনেতৃবৃন্দ ইরানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ইসরাইলের আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিলেও ইরানের উপর হামলা বন্ধ করেনি ইসরাইল। উল্টো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরাইলের পক্ষে নামিয়ে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে ইসরাইল। কিন্তু বিশ্বের অধিকাংশ দেশই তা সমর্থন করছে না। গতকাল শুক্রবারও ইরানের একটি হাসপাতালে ইসরাইল হামলা চালিয়েছে। ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে ইরানের রাস্তায় জনগণ বিক্ষোভ করেছে। এদিকে ইরানও পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইসরাইলে। ইসরাইলের হামলা বন্ধ করে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার খবরে জানা গেছে, ইরানে ইসরাইলের হামলার পর পরই চীন ও রাশিয়া, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে ইসরাইলের অব্যাহত হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তারা অবিলম্বে উত্তেজনা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে । একইসঙ্গে সতর্ক করেছে যে, এর ভয়াবহ বৈশ্বিক পরিণতি হতে পারে।

অপরদিকে ইসরাইলের হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ২১টি মুসলিম দেশ। দেশগুলো হলো, মিশর, আলজেরিয়া, বাহরাইন, ব্রুনেই, শাদ, কোমরোস, জিবুতি, গাম্বিয়া, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, লিবিয়া, মৌরিতানিয়া, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, সুদান, সোমালিয়া, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।

দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে যে সংঘাত শুরু হয়েছেÑ তা পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে এবং এখন জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।

এদিকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র ইসরাইলের ইরানের ওপর হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন। মুখপাত্র বলেন, উত্তর কোরিয়া ইসরাইলের সামরিক হামলার কারণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং তা দৃঢ়ভাবে নিন্দা জানাচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে ফের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। এতে রাজধানী তেল আবিব, হাইফাসহ ইসরাইল জুড়ে সাইরেন বেজে ওঠে। টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিরশেবা, তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

ইরানের নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ইসরাইলী প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সেখানেই থাকতে বলা হয়েছে।

ইসরাইলের চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, এই দফায় প্রায় ৩৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইরান। এরমধ্যে বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র হাইফা এবং বিরশেবা এলাকায় আঘাত হানে, যা সম্প্রতি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও জেরুসালেমেও কমপক্ষে একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

ইসরাইলী অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানিয়েছে, হাইফাতে ইরানের নতুন করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৭ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন ১৬ বছর বয়সী কিশোরও রয়েছে। তাদের হাসপতালে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে অন্তত ‘কয়েক ডজন’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। তার মধ্যে কয়েকটি সাধারণ নাগরিকদের বসতি ও ইসরাইলের দক্ষিণে বিরশেবা শহরের গাভ-ইয়াম অ্যাডভান্সড টেকনোলজি পার্কে আঘাত হানে। এতে হাইটেক পার্কে অবস্থিত মাইক্রোসফট অফিসের কাছাকাছি এলাকায় আগুন জ্বলছে এবং আশেপাশের আবাসিক ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও প্যারামেডিক টিম জানিয়েছে, এ হামলায় কমপক্ষে ছয়জন আহত হয়েছেন এবং তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

অপর দিকে ইরানের পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে নতুন হামলা শুরু করেছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। শুক্রবার টাইমস অব ইসরাইলের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

তেহরানে হাসপাতালে ইসরাইলী হামলা, ভয়াবহ জবাবের হুঁশিয়ারি ইরানের

এক সপ্তাহ ধরে চলমান হামলা-পাল্টা হামলার মাঝে ইরানের রাজধানী তেহরানের আরেকটি হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। শুক্রবার ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা হাসপাতালে ইসরাইলী হামলার এই তথ্য জানিয়েছেন।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান এক বিবৃতিতে বলেছেন, এ নিয়ে তৃতীয় হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। ছয়টি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রও নির্মমভাবে ইহুদিবাদী শত্রুদের আক্রমণের শিকার হয়েছে।

ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানে জনতার বিক্ষোভ

সাপ্তাহিক জুমার নামাযের পর ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ইরানের ক্ষমতাসীন সরকার ও নেতাদের সমর্থনে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়। শুক্রবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য হস্তক্ষেপের হুমকির বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত খবরে বলা হয়, ‘‘আজকের শুক্রবার ইরানি জাতির ঐক্য ও প্রতিরোধের দিন।’’

প্রচারিত ভিডিওতে বিক্ষোভকারীদের হাতে ১৩ জুন ইসরাইলের হামলায় নিহত বিভিন্ন কমান্ডারের ছবি দেখা যায়। এ সময় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেকে ইরান, ফিলিস্তিন ও হিজবুল্লাহর পতাকাও উড়াচ্ছিলেন।

হামলা বন্ধ না হলে আলোচনা নয় : ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইসরাইলী হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তেহরান আলোচনায় বসবে না বলে আবারও জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

আরাঘচি বলেছেন, ‘‘আমেরিকানরা আলোচনা চায় এবং কয়েকবার বার্তা পাঠিয়েছে। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আলোচনার কোনও সুযোগ নেই।’’

তিনি বলেন, ‘‘এই অপরাধের অংশীদার হওয়ায় আমেরিকার সঙ্গে আমাদের কোনও আলোচনা নেই।’’

গত সপ্তাহে ইসরাইলের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর প্রথমবারের মতো পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য জেনেভায় গেছেন আরাঘচি। শুক্রবার আরও পরের দিকে জেনেভায় ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে তার।

এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও বলেছেন, শত্রুর আগ্রাসন নিঃশর্তভাবে বন্ধ এবং ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অভিযান চিরতরে অবসানই আরোপিত এই যুদ্ধ বন্ধের একমাত্র পথ।’’

অন্যথায় শত্রুদের প্রতি আমাদের প্রতিক্রিয়া আরও বেশি গুরুতর এবং ভয়াবহ হবে, বলেও হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি। সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানের এই প্রেসিডেন্ট। সূত্র: রয়টার্স।

ইসরাইলের দাবি মিথ্যা, বেঁচে আছেন খামেনির উপদেষ্টা আলী শামখানি

সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টা আলী শামখানি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছিল ইসরাইল। তবে এ তথ্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জীবিত রয়েছেন শামখানি।

ইসরাইলের প্রথম দফার বিমান হামলার পর থেকেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, শামখানি নিহত হয়েছেন। বিশেষ করে ইরানের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কাঠামোতে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে খবরটি নিয়ে বড় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

তবে তিনি ইসরাইলের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এখন স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন তিনি এবং পুরোপুরি সেরে উঠছেন। ইরানি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে শামখানি বলেন, ‘আমি জীবিত আছি এবং ইরানের জন্য জীবন দিতে সবসময় প্রস্তুত।’

শামখানির জীবিত থাকার খবর চলমান যুদ্ধাবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে বিবেচিত হচ্ছে। গত সপ্তাহে ইসরাইল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে বিমান হামলা চালালে দুপক্ষের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় তেহরান।

ইসরাইলের কর্তৃপক্ষের মতে, তখন থেকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন ইসরাইলী নিহত এবং আরও শতাধিক আহত হয়েছেন। এদিকে, ইরানি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলী হামলায় ৬৩৯ জন নিহত এবং ১,৩০০ জনেরও বেশি নাগরিক আহত হয়েছেন।

বেসামরিক পরমাণু স্থাপনায় হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন : সৌদী

বেসামরিক পারমাণবিক স্থাপনায় সামরিক হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে সৌদি আরবের পারমাণবিক ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রক কমিশন। বৃহস্পতিবার ইরানের একাধিক পরমাণু স্থাপনায় ইসরাইলের হামলার পর এই মন্তব্য করেছে সৌদি আরব।

কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার লাইভ আপডেটে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার হামলার শুরুর পর থেকে ইরানের একাধিক পারমাণবিক স্থাপনাকে নিশানা করেছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ইরানের খোন্দাব হেভি ওয়াটার রিসার্চ রিঅ্যাক্টরের ওপরও হামলা হয়েছে।

বেসামরিক পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরাইলের এমন হামলার পর সৌদি আরবের পারমাণবিক ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রক কমিশন বলেছে, বেসামরিক পরমাণু স্থাপনায় সামরিক হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বলেছে, ইসরাইলের হামলায় ইরানের খোন্দাব হেভি ওয়াটার রিসার্চ রিঅ্যাক্টর স্থাপনার মূল ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, স্থাপনাটি নির্মাণাধীন হওয়ায় সেখানে কোনও ধরনের পারমাণবিক উপাদান ছিল না। যে কারণে সেখানে বিকিরণের কোনও ঝুঁকি নেই বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

এর আগে, ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতাঞ্জ এবং ভূগর্ভে অবস্থিত ফোরদো প্ল্যান্টেও হামলা চালায় ইসরাইলী বাহিনী।

ইরান-ইসরাইল থেকে নাগরিকদের সরানোর হিড়িক বিভিন্ন দেশের

সংঘাত কবলিত ইরান এবং ইসরাইল থেকে নিজ নিজ নাগরিকদের সরিয়ে নিতে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ। এই তৎপরতা বা ব্যস্ততার বড় কারণÑ ইরান-ইসরাইল উভয়েই নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ রেখেছে।

এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, গত ১৩ জুন সংঘাত শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ইরান থেকে প্রায় ১ হাজার ৫০০ এবং ইসরাইল থেকে ১ হাজার ২০০ জন নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আপাতত তাদেরকে সবাইকে সাইপ্রাসে রাখা হবে।

চীন এ পর্যন্ত ইরান থেকে ১ হাজার ৬০০ জন এবং ইসরাইল থেকে বেশ কয়েক শত নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছে। বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, আপাতত এই নাগরিকদের আজারবাইজান, তুর্কমেনিস্তান, তুরস্ক, আর্মেনিয়া এবং ইরাকে রাখা হবে।

ইরান ও ইসরাইলে অবস্থানরত নাগরিকদের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দিয়েছে নয়াদিল্লি। যারা যোগাযোগ করেছেন, তাদেরকে আপাতত আর্মেনিয়ায় সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, তারপর সেখান থেকে ভারতগামী ফ্লাইট ধরবেন তারা।

নিজ নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে দু’টি সামরিক বিমান পাঠাচ্ছে জাপান। এই বিমান দু’টি আপাতত আফ্রিকার দেশ জিবুতিতে অবস্থান করবে। তারপর সেখান থেকে ইরান এবং ইসরাইলে গিয়ে জাপানি নাগরিকদের তুলে নেবে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ইসরাইলে প্রায় ১ হাজার এবং ইরানে ২৮০ জন জাপানি অবস্থান করছেন।

সাইবার হামলার আশঙ্কায় দেশজুড়ে ইন্টাননেট বন্ধ রেখেছে ইরান

সম্ভাব্য সাইবার হামলা ঠেকাতে দেশজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রেখেছে ইরান। যোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইরানের আধাসরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সি। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ আছে ইরানে।

শুক্রবার বিবৃতিতে দেশটির যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আগ্রাসনকারী শত্রুরা যেন দেশের যোগাযোগ নেটওয়ার্কের অপব্যবহার না করতে পারে, সেজন্য সাময়িকভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি যে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইটগুলো ধংস এবং ‘টার্গেটেড’ ব্যক্তিদের ট্র্যাক করার জন্য শত্রুপক্ষ সাইবার আর্মি গঠন করেছে।”

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মাইক্রোসফট অফিস, আহত ৭

ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিয়েরশেবায় ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মাইক্রোসফটের অফিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় বড় ধরনের প্রাণহানি না ঘটলেও অন্তত ৭ জন সামান্য আহত হয়েছেন।

শুক্রবার সকালে লাইভ আপডেটে এসব তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল-জাজিরা। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইরানের হামলায় বিরশেবা সেন্ট্রাল রেলস্টেশন আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে স্টেশনটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

‘ইরানের পাশে আছি’ - বললেন হিজবুল্লাহ প্রধান

ইসরাইলী হামলা এবং যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির মুখে ইরানের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন জানিয়ে মুখ খুলেছেন হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল শেখ নাঈম কাসেম।

একটি দীর্ঘ বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন, তা শুধু ইরানেরই নয়, বরং পুরো অঞ্চলের জনগণের বিরুদ্ধে এক ধরনের আগ্রাসন।

হিজবুল্লাহ মূলত ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত, কিন্তু চলমান সংঘাতে তারা এখন পর্যন্ত সরাসরি জড়ায়নি। গত বছরের ইসরাইলের সঙ্গে ভয়াবহ যুদ্ধের পর সংগঠনটি উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে, ফলে তারা এখনো লেবানন সীমান্তেও সক্রিয় হয়নি।