প্রতিহিংসামূলক সব বদলির আদেশ বাতিল ও এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা না হলে ২৮ জুন থেকে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একইসঙ্গে মঙ্গলবার থেকে লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়।
তাছাড়া রাজস্ব অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে এনবিআর কর্তৃক গঠিত রাজস্ব অধ্যাদেশ সংস্কার বিষয়ক কমিটি বাতিল করে আজকের মধ্যে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব অন্তর্ভুক্ত করে এবং বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ এনবিআর সদস্যদের বাদ দিয়ে নতুন করে কমিটি গঠনের দাবি করা হয়েছে সম্মেলনে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও মহাসচিব অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা।
সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করা কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকার কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি এবং ঢাকার বাইরে স্ব স্ব দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি, কলম বিরতি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ। জারি করা প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক সব বদলি আদেশ বাতিল না হলে এবং নিপীড়নমূলক নতুন কোনো বদলির আদেশ হলে ২৫ ও ২৬ জুন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে কলম বিরতি, অবস্থান কর্মসূচি এবং চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ।২৭ জুনের মধ্যে বদলি আদেশ বাতিল না করা হলে এবং দেশ ও রাজস্ব ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করা হলে ২৮ জুন থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন চলবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রেখে রাজস্ব সংস্কার সম্ভব নয়, কারণ তিনি এটি বাস্তবায়ন হতে দেবেন না। পলাতক আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী যে ৪৪ জন আমলার তালিকা করা হয়েছে, তার মধ্যে তিনি ৩ নম্বরে রয়েছেন। তিনিই এনবিআর বিলুপ্তি প্রচেষ্টার মূলহোতা, তিনি নিপীড়নমূলক বদলিসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের পরিবেশ বিনষ্টকারী ও সরকারকে বিভিন্ন ভুল তথ্য দিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব সৃষ্টির অপচেষ্টাকারী।
এর আগে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সকাল থেকে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাজির হন। তাদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। যেখানে দেখা গেছে– ‘ গোলামী আইন বাতিল কর, করতে হবে’, ‘বদলির নামে প্রহসন মানি না, মানবো না’ কিংবা ‘বদলির নামে জুলুমবাজি বন্ধ করতে হবে’ ইত্যাদি।