বিশিষ্ট সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, লেখক, গবেষক এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাপ্তাহিক সোনার বাংলা পত্রিকার তৎকালীন সম্পাদক মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের অবদান এবং ত্যাগের কথা স্মরণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতি দিয়েছেন।

গতকাল বুধবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, শহীদ মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার পাশাপাশি দৈনিক সংগ্রাম ও সাপ্তাহিক সোনার বাংলা পত্রিকায় লেখার মাধ্যমে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতেন এবং একজন লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গিয়েছেন। তিনি অনেকগুলো মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার রচিত গ্রন্থ ও প্রবন্ধসমূহ যুগ যুগ ধরে ইসলামী আন্দোলনের কর্মী ও দেশের জনগণকে অনুপ্রাণিত করবে।

তিনি আরও বলেন, জেনারেল এরশাদ ও শেখ হাসিনার তৎকালীন স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনে তিনি জামায়াতের রাজনৈতিক লিয়াজোঁ কমিটির একজন সদস্য হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে গিয়েছেন। দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ন্যায় বিচার, মানবাধিকার ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তার যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে তা তাকে স্মরণীয় করে রাখবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারসহ কূটনীতিকদের সাথে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে তাদের নিকট তিনি জামায়াতের দাওয়াত পৌঁছে দিতেন। তিনি সত্য কথা বলতে কখনো দ্বিধাবোধ করতেন না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই জনগণের মনে স্থান করে নিয়েছিলেন। ‘মুহাম্মদ কামারুজ্জামান’ এ নামটি বাংলাদেশের ছাত্র-যুবক সকলের অন্তরে গ্রোথিত হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, তৎকালীন সরকার তাকে মিথ্যা ও সাজানো রাজনৈতিক মামলায় দলীয় লোকদের দ্বারা মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করিয়ে ফাঁসির দ- হাসিল করে। ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল রাত ১০টা ৩০ মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। তিনি তার লেখনির মাধ্যমে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন। তিনি যে ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়ে গেছেন, তা এ দেশের মানুষের মনে আবেগ ও অনুভূতি সৃষ্টি করবে। আমি তার অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানের সাথে স্মরণ করছি। মহান রব্বুল আলামীন তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন ও তাকে জান্নাতে উচ্চ মাাকাম দান করুন। তার রেখে যাওয়া ইসলামী আন্দোলনের অসমাপ্ত কাজ আঞ্জাম দেয়ার জন্য এবং এ দেশে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শরীক হওয়ার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।