পটুয়াখালী সংবাদদাতা : পটুয়াখালীর সদর উপজেলার লোহালিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় নদীর গর্ভ থেকে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে মাটি কাটছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। এই অবৈধ কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে লোহালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামাল হোসেন মৃধার বিরুদ্ধে। এর ফলে ঝুঁকির মুখে পড়েছে পাকা রাস্তা, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ শতাধিক বসতবাড়ি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ভেকু ও ডাম্পার ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এবং ইট ভাটায় বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে নদীর পাড় ভেঙে পড়ছে এবং আশপাশের অবকাঠামোতে ফাটল ধরতে শুরু করেছে।
পালপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, “আমাদের বাজারের পাশের রাস্তার একাংশ ধসে পড়ছে। ভয় লাগছে, যে কোনো সময় পুরো বাজার নদীতে চলে যেতে পারে। বাধা দিলে কামাল মৃধার লোকজন হামলা-মামলার হুমকি দেয়।”
স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবক জানান, মাদ্রাসার ভবন নদী ভাঙনের শিকার হলে শত শত শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। প্রতিদিন সন্তানদের মাদ্রাসায় পাঠাতে তারা আতঙ্কে থাকেন।
ভুক্তভোগী জাকির হোসেন বলেন, মাটি কাটতে কাটতে আমাদের বাড়িও এখন ঝুকিতে আছে। বিষয়টি একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানালেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
লোহালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সাওন হোসেন বলেন, “কামাল মৃধার নেতৃত্বে এই মাটি কাটা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। আমরা থামানোর চেষ্টা করলেও তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সবকিছু উপেক্ষা করে। আমি বাধা দেয়ায় আমাকে মারতে আসছে। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।”
পরিবেশবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, এভাবে নির্বিচারে মাটি কাটতে থাকলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিতে পারে, যা পুরো ইউনিয়নের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এভাবে বেড়িবাঁধের পাশ থেকে মাটি কাটা উচিত নয়। মাটি কাটলে বেরিবাধ চরম ঝুঁকিতে পরবে। পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এলাকাবাসী দ্রুত অবৈধ মাটি কাটার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা ও দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন , এভাবে মাটি কাটলে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে পড়বে। আমাদের প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে আমরা তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করবো।
পটুয়াখালী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি কর্মকর্তা চন্দন কর বলেন , আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যত প্রভাবশালী হোকনা কেন ব্যবস্থা নিবো।