বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে আবারও বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও গরু-ছাগলের গোস্তের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লারের কেজি ১৫-২০ টাকা বাড়লেও সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় মাছে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তবে সবজির দাম এখনও বেশ চড়া, অপরিবর্তিত রয়েছে চাল ও মুদিপণ্যের মূল্য।
গতকাল শুক্রবার নগরীর কাজির দেউড়ি, রেয়াজুদ্দীন বাজার, কর্ণফুলী বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
মাংসের বাজার : গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৪৫ টাকায় নেমে এলেও বর্তমানে তা ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির দাম ২৮০-৩১০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০ টাকা, সাদা ও লাল লেয়ার ২৬০-২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁস বিক্রি হচ্ছে জাতভেদে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা, এখন ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছাগলের মাংস কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ১২৫০ টাকায় উঠেছে। ডিমের বাজার : ডিমের দামে তেমন হেরফের নেই। ফার্মের ডিম ডজনপ্রতি ১৩০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ২৪০ ও হাঁসের ডিম ২৬০ টাকা।
সামুদ্রিক ও চাষের মাছ : দুই সপ্তাহ ধরে সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কিছুটা কম। লইট্যা ১০০-১৮০, ফাইস্যা ১২০-২০০, পোয়া ১৫০-৩০০, শাপলা পাতা ৩৫০-৪৫০, কোরাল ৬০০-৯০০, রুপচান্দা ৩৫০-৭০০, আইড় ৩০০-৬৫০, চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) ৬০০-১১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা ৩০০-৩৪০, পাবদা ৩৫০-৪০০, টেংরা ৬০০-৭০০, পুঁটি ২০০-২৫০, সরপুঁটি ৩০০-৪৫০, শিং ৪০০-৪৫০, কৈ ২০০-২২০ এবং তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ইলিশের বাজার : ইলিশ এখনও সাধারণের নাগালের বাইরে। এক-দেড় কেজির ইলিশ ২০০০-২২০০ টাকা, মাঝারি সাইজের (৫০০-৭০০ গ্রাম) ইলিশ ১৩০০-১৫০০ টাকা, এক কেজির কাছাকাছি ইলিশ ১৮০০ টাকা এবং বড় সাইজের (২-২.৫ কেজি) ইলিশ ৩০০০-৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জাটকা মিলছে কেজিপ্রতি ৫০০-৫৫০ টাকায়।
সবজির বাজার : সবজির দাম এখনও চড়া। কাঁকরোল, বরবটি, পটল, করলা, ঝিঙা ৮০-৯০ টাকা, বেগুন ৭০, গাজর (দেশি) ৮০, চায়নার গাজর ১৩০, কচুর লতি ও মুখী, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম, শিম ৭০-৮০ টাকা, মূলা ৬০, পেঁপে ও লাউ ৫০ টাকা কেজি। কাঁচামরিচ ১২০-১৩০ টাকা, ধনেপাতা ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জের আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৩৫ টাকা। মিষ্টিকুমড়া ৩৫ টাকা। কচু শাক, পুঁই শাক ৪০ টাকা, লাল শাক ও মিষ্টিকুমড়া শাক ৫০ টাকা।
চাল ও মুদিপণ্য : চালের দাম এখনো স্থিতিশীল। মিনিকেট (বিভিন্ন ব্র্যান্ড) ৮০-৮৫ টাকা, আতপ মিনিকেট ৮৫-৯০ টাকা, স্বর্ণা ৫৫-৫৭, ব্রি-২৮/২৯ চাল ৬০-৬২ টাকা কেজি। পেঁয়াজ ৫০-৬০, দেশি রসুন ১২০, চায়না রসুন ও আদা ১৮০-২০০ টাকা, ভারতীয় আদা ১২০ টাকা। ডালের মধ্যে ছোট মসুর ১৩০, মোটা ১১০, বড় মুগ ১৪০, ছোট মুগ ১৭০, খেসারি ১০০, বুট ১১০, মাষকলাই ১৮০, ছোলা ১০০, ডাবলি ৬০ টাকা। বাদাম ও মসলার মধ্যে কাজু ১৭০০, পেস্তা ২৭০০, কাঠ বাদাম ১২২০, কিশমিশ ৬০০-৭০০, দারুচিনি ৫২০, লবঙ্গ ১৪০০, কালো গোলমরিচ ১৩০০, সাদা গোলমরিচ ১৬০০ ও জিরা ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত পোলাও চাল ১৩০-১৫০, খোলা পোলাও চাল ১১০-১২০ টাকা।
অন্যান্য নিত্যপণ্য : প্যাকেটজাত সাদা চিনি ১২৫, খোলা চিনি ১২০-১৪০, প্যাকেট লাল চিনি ১৭০ টাকা। দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০, আটা ৯০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন ১৯০-১৯৫, খোলা সয়াবিন ১৮০, খোলা সরিষার তেল ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বাড়ায় মধ্যবিত্তের চিন্তা বাড়লেও মাছের বাজারে কিছুটা স্বস্তি যেন আশার বার্তা দিচ্ছে।