মিয়া হোসেন ঢাকা/মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ও মো লাভলু শেখ লালমনিরহাট থেকে : খুনিদের বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া কোন নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। কালো টাকার পেশী শক্তির প্রভাবযুক্ত নির্বাচন দেখতে চাই না। নির্বাচনের জন্য অবশ্যই সমতল মাঠ তৈরি করতে হবে। এ জন্য যত সহযোগিতা চাইবেন তা দিতে প্রস্তুত রয়েছি। তার আগে বিচার ও সংস্কার এ দুটো নিশ্চিত করে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

গতকাল শনিবার দুপুরে লালমনিরহাট কালেক্টরেট মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। লালমনিরহাট জেলা জামায়াতের আমীর আবু তাহের এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন, লালমনিরহাট-২ আসনে জামায়াতের এমপি প্রার্থী ফিরোজ হায়দার লাভলু, লালমনিরহাট-১ আসনের প্রার্থী আনোরুল ইসলাম রাজু ও সদর আসনের প্রার্থী হারুন অর রশিদসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান পরিচালনায় করেন লালমনিরহাট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এ্যাডভোকোট মোঃ ফিরোজ হায়দার লাভলু। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কুরআন তেলাওয়াত এর পর ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন লালমনিরহাট জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মোঃ ফজলুল হক শামিল ও তার টিম।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশে সমস্যা যারা সৃষ্টি করেছিল, ক্ষমতাকে যারা টিকিয়ে রাখার জন্য মানুষের বুকে গুলী করে হাজার হাজার মানুষ খুন করেছে, গুম করে আয়না ঘরে বন্দী করে রেখেছে, কেউ চোখ হারিয়ে অন্ধ, কেউ হাত পা হারিয়ে পঙ্গু, এ অবস্থায় যে কোন নির্বাচনের আগে খুনিদের বিচার দৃশ্যমান হতে হবে আর প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। এ দু’টি ছাড়া নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এ বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমরা নির্বাচন চাই, সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। কালো টাকার পেশী শক্তির প্রভাবযুক্ত নির্বাচন দেখতে চাই না। নির্বাচনের জন্য অবশ্যই সমতল মাঠ তৈরি করতে হবে। এ জন্য যত সহযোগিতা চাইবেন তা দিতে প্রস্তুত রয়েছি। তার আগে বিচার ও সংস্কার এ দুটো নিশ্চিত করে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছর মানুষের স্বাধীনতা ছিল না। জনগণের মুখের ভাষা কেড়ে নেয়া হয়েছিল, জনগণের ইজ্জত আব্রু কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশকে একটি জীবন্ত কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল। তারা চেয়েছিলেন মামলা করে হামলা করে, খুন করে, আয়না ঘরে বন্দী করে এই বাংলাদেশের মানুষের কন্ঠকে স্তব্ধ করে দেবেন। কিন্তু ইতিহাস কী বলে? ইতিহাস বলে এইভাবে মানুষকে দাবিয়ে রাখা যায় না। তারা বাংলাদেশের বিপ্লবী জনগণকে দাবিয়ে রাখতে পারেননি। সাড়ে ১৫ বছরের ধারাবাহিক আন্দোলন ত্যাগ এবং কুরবানি সবকিছুর শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আমাদের যুব সমাজের নেতৃত্বে¡ তারা শুধু গদি ছাড়তে বাধ্য হননি তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। আমরা বলি, এ দেশের সত্যিকারের নাগরিক যারা তারা কখনই দেশ থেকে পালানোর চিন্তা করে না। যারা দেশকে ভালোবাসে তারা জনগণের ট্যাক্স এর টাকায় কেনা অস্ত্র আর গুলী জনগণের বুকে চালায় না। তারা সবই করেছে তারা চেয়েছিলো ফেরাউনের মতো এই দেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে আল্লাহ যেভাবে ফেরাউনদের অতীতে বিদায় দিয়েছেন এমনকি যাওয়ার সময় নিজের সহকর্মীদেরকেও বলে যেতে পারেনি যে, আমি অমুক জায়গায় চলে যাচ্ছি। তারা আফসোস করে বলেছে, এমন একটি দল করলাম, নিরাপদে নেতারা চলে গেলেন কিন্তু আমাদের কি হবে তা বলে গেলেন না, এমন রাজনীতি যারা করতেন, সরকারের ইশারা ইঙ্গিতে যারা মানুষের উপর জুলুম করেছেন আশা করি তারা এখন বুঝতে পেরেছেন জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে কখনো কেউ পার পায় না।

তিনি বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরে এদেশের ১৮ কোটি মানুষের উপরে তা-ব চালিয়েছিল। শুরু করেছিল জামায়াতে ইসলামীকে দিয়ে তার আগে শুরু করেছিল সেনাবাহিনীকে দিয়ে, জামায়াত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিচারের নামে তামাশা করে হত্যা করার মধ্য দিয়ে। আর শেষ করেছে জামায়াতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। আজকে বাংলাদেশের জনগণের অন্তর থেকে কে নিষিদ্ধ হয়েছে? ফ্যাসিস্টের পতন হয়েছে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্টের পতন হয়েছে কিন্তু‘ ফ্যাসিবাদ এখনো বিদায় নেয়নি। এখনো বাংলাদেশের মানুষ এক শ্রেণীর রাজনৈতিক কর্মী নামের যারা কলঙ্ক তাদের হাতে এখনো নির্যাতিত হচ্ছে রাস্তাঘাটে ফুটপাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মিল ফ্যাক্টরি ইন্ডাস্ট্রিতে পরিবহন সেক্টরে সর্বত্র তারা ভয়াবহ চাঁদাবাজের তা-বে অতিষ্ঠ। জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে আমরা এই সংগ্রামী জনগণকে অভিনন্দন জানাই এবং আশ্বস্ত করি চাঁদাবাজ দখলদারদের বিরুদ্ধে আমরা একসাথে এগিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ। আমরা এ দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত দেখতে চাই। এটি রাষ্ট্রের একটি দায়িত্ব।

তিনি বলেন, আমরা ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত চার দলীয় সরকারের অংশ ছিলাম, সেখানে আমাদের দুইজন শীর্ষস্থানীয় নেতা তারা তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে হাজার জাতের মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে কিন্তু তারা দুর্নীতি করেছেন এই প্রশ্ন উঠাতে পারেনি। কোন দুর্নীতি খুঁজে পায়নি, তারা শুধু সৎ ছিলেন না, তারা সৎ ছিলেন, স্মার্টও ছিলেন। দক্ষতার সাথে তারা তিনটি মন্ত্রণালয় সামাল দিয়েছেন। দশটা মন্ত্রণালয়ে যদি জামায়াতের হাতে আসতো তাহলে দশ মন্ত্রণালয় একই চিত্র দেখা যেত।

তিনি সরকারী কর্মচারীদের সর্ম্পকে বলেন, এই রাষ্ট্রের অগ্রগতি উন্নয়নে শৃঙ্খলা বিধানে যারা কর্মকর্তা কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে, তাদেরকে সম্মানের জায়গা নিশ্চিত করে দিতে হবে, তাদেরকেও সম্মানজনক বেতন ভাতা দিতে হবে। একজন পুলিশ একটা বেতন দিবেন ২২ হাজার টাকা তার ঘর ভাড়া ১৫ হাজার টাকা, তিনি বাঁচবে কেমনে? তাহলে রাষ্ট্রই তাদেরকে বাধ্য করছে দুর্নীতি করতে। আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই যেখানে সম্মানজনকভাবে সকল পেশায় সকল শ্রেণীর মানুষ ভালো থাকবেন।

তিনি শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে বলেন, যাদের হাতে আমরা বাংলাদেশ তুলে দিতে চাই, আমরা তাদের জন্য এমন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলবো ইনশাল্লাহ যেই শিক্ষাব্যবস্থা দেশের প্রত্যেকটি মানুষকে সম্মান করতে শেখাবে ভালবাসতে শেখাবে। এখন যারা শিক্ষিত হচ্ছেন তারা নিজেকে রাজা মনে করেন আর বাকিদেরকে প্রজা মনে করেন এই মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। তারা নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি বৈষয়িক শিক্ষায়ও চরম উৎকর্ষ সাধন করবেন। শিক্ষার পাঠ চুকানোর সাথে সাথে তাদের হাতে রাষ্ট্র তাদের কাজের সুযোগ তুলে দেবে।

তিনি কর্মসংস্থান সম্পর্কে বলেন, আমরা চাই প্রত্যেকটা নাগরিকের হাত হবে এই দেশ গড়ার কারিগরের হাত। একজন কৃষক মাঠে ফসল ফলাবেন সর্বোচ্চ বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে, পরিশ্রম হবে সহনীয় উৎপাদন হবে অভাবনীয়। আবার উৎপাদিত পণ্য তার মার্কেট প্রাইস নিশ্চিত করে কৃষককে উৎসাহিত করতে হবে। যে সমস্ত পণ্য উৎপাদনের পর নষ্ট হয়ে যাওয়ার পথে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে জায়গায় জায়গায় সেখানে কৃষি পণ্য সংরক্ষণাগার গড়ে তুলতে হবে এবং রাষ্ট্রকে তার পূর্ণ সহযোগিতা দিতে হবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।

তিনি নারীদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে বলেন, আমাদের মায়েরা, আমাদের বোনেরা, আমাদের মেয়েরা, একই শিক্ষায় তারা শিক্ষিত হবে, তাদের হাতগুলোও দক্ষ কারিগরের হাত হিসেবে গড়ে তোলা হবে। কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে যারা আগ্রহী তাদেরকে তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে উপযুক্ত জায়গায় কাজ তৈরি করে দেয়া হবে। বর্তমানেও তারা কাজ করেন, সংসারের প্রয়োজনে নিজের মেধা দিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু তাদের দুটি জিনিসের বড় অভাব, তাদের জন্য সামাজিক কোনো নিরাপত্তা গত ৫৪ বৎসরের সরকারগুলো দিতে পারে নাই। তারা ইনশাল্লাহ স্বপ্নের আগামীর বাংলাদেশে কাজ করবেন যেখানে তারা মর্যাদা এবং নিরাপত্তা দুটোই পাবেন।

তিনি আরো বলেন, কেউ কেউ অপপ্রচার চালায় যে, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে মহিলাদেরকে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে দিবে না, এটা সঠিক নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লাম জীবনের সবচাইতে কঠিন কাজ যুদ্ধে সেখানেও নিজ স্ত্রীগণ এবং মহিলাদেরকে সুযোগ করে দিয়েছিলেন যুদ্ধ করার জন্য, যদি তারা যুদ্ধ করতে পারে তাহলে সমাজের কোন কাজটা তারা করতে পারবে না? আমি আগেই বলেছি সম্মানও নিশ্চিত করা হবে আবার নিরাপত্তাও তাদের জন্য নিশ্চিত করা হবে।

তিনি রাসূল সা. এর বানী উদ্ধৃত করে বলেন, রাসুলে করিম সাঃ বলেছিলেন, এমন একটি রাষ্ট্র কুরআনের ভিত্তিতে আমি দুনিয়াবাসীকে উপহার দিয়ে যাব সে যেই হোক যে ধর্মের যে বর্ণেরই হোক একজন তরুণী চার হাজার মাইলের রাস্তা একাকী অতিক্রম করবে তার দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস কেউ সাহস করবে না। কুরআন সকল মানুষকে সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। কুরআনের আলোকে সমাজে সকলের নিরপ্তত্তা নিশ্চিত করার কথা তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি নিরাপত্তার নিশ্চয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, নিশ্চয়তা দিচ্ছি, কথায় নয় কাজে আমরা প্রমাণ করব, নিরাপত্তা সবাইকে দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের অতীত এবং বর্তমান কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করুন, বিপদে আপনি আপনার পাশে আমাদেরকে পেয়েছেন, পাচ্ছেন এবং আমরা আপনাদেরকে ওয়ারেন্টি দিচ্ছি ভবিষ্যতেও পাবেন ইনশাআল্লাহ।

তিনি সংখ্যালঘুদের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিগত ৫৪ বছর ধরে সংখ্যালঘু স্লোগান তুলে সমাজকে বিভক্ত করে আমাদেরকে দুর্বল করে আমাদেরকে মুখোমুখি লাগিয়ে রাখা হয়েছিল। আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাবো, রংপুরের মৎস্য পল্লীতে, দিনাজপুরের সাঁওতাল পল্লীতে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু পল্লীতে কারা হামলা চালিয়েছিল, লুটপাট করেছিল, ভাঙচুর করেছিল, আপনারা দেখার চেষ্টা করুন, যারা বেশি সংখ্যালঘু বলে মায়া কান্না করেছে তারাই অপকর্মগুলো করেছে। আর তারা আমাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছে। আমরা আল্লাহকে ভয় করি। যারা আল্লাহকে ভয় করে তাদের কাছে মানুষের মাল ও ইজ্জত নিরাপদ। আমরা সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু এ শব্দই শুনতে চাই না। যারা জন্ম নিয়েছে আর যারা নাগরিক হিসেবে বাস করে তারা দেশের গর্বিত ও সম্মানিত নাগরিক। দেশ ও সংবিধান সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে বাধ্য।

তিনি উত্তরাঞ্চলবাসীর দাবি সম্পর্কে বলেন, আপনাদের এক নাম্বার দাবি হচ্ছে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ নির্মূল হয়েছে দেখতে চাই। দুই নাম্বার দাবি হচ্ছে, উত্তবঙ্গের প্রাণপ্রিয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম কবে মুক্ত হবেন তা মানুষ জানতে চায়। আমরা তাকে ফেরত চাই। তিনি ফিরে আসলে আমর রংপুরে তাকে নিয়ে জনসভা করবো, ইনশাআল্লাহ।

তিনি ভারত সম্পর্কে বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ। তাদের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে বসবাস করতে চাই। আমরা ভালো থাকলে তারাও ভালো থাকবেন। আমাদের ন্যায্য অধিকার দিতে হবে। বর্ষার মওসুম আসলে মানুষ আতঙ্কে থাকে। বন্যার পানি মানুষকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে। তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি উত্তবঙ্গের সমস্যা সম্পর্কে বলেন, এই এলাকা কৃষি প্রধান এলাকা। শিল্প কারখানা করার জন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। মেডিকেল কলেজ জেলায় জেলায় না করতে পারলে অবশ্যই মানম্মত হাসপাতাল প্রত্যেক জেলায় থাকতে হবে। সেবার টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আবদুল হালিম, বলেন, বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের গৌরব শহীদ আবু সাঈদ। তার গৌরবকে ধারণ করে সবাইকে বাংলাদেশ বৈষম্য মুক্ত ও চাঁদাবাজ মুক্ত সমাজ গঠনে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। সেই সাথে নিরপরাধ জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটি এম আজহারুল ইসলাম এর অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন বলেন, গত ৫ আগষ্ট ২০২৪ ইং তারিখ বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তবে ইনসাফের কথা সবাই বলে। কিন্তু কেউ ইনসাফভিত্তিক চলে না। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইসলামি আইন চালু করতে চায়। ওই আইন চালু হলে কোন মানুষ ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না।

অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর হাসিনার বন্দীশালা থেকে মুক্তি পেয়েছি। ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে। তাই এ বাংলাদেশে আলেম- ওলামা হত্যাকারী সরকার আর দেখতে চাই না। আমরা আর ভুয়া নির্বাচন দেখতে চাই না। আগামী নির্বাচন সংস্কারের পরে দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন, লালমনিরহাট ( আদিতমারী - কালীগঞ্জ) -২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী জননেতা ও লালমনিরহাট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট মোঃ ফিরোজ হায়দার লাভলু, লালমনিরহাট- ( পাটগ্রাম-হাতীবান্ধা)-১ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী জননন্দিত নেতা মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম রাজু ও লালমনিরহাট - সদর- ৩ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী জনপ্রিয় নেতা প্রভাষক মোঃ হারুনুর রশিদ, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা সহকারী সেক্রেটারি হাফেজ শাহআলম, লালমনিরহাট জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোঃ আব্দুল মোতালেব, বৈষম্য বিরোধী ছাএ আন্দোলন এর লালমনিরহাট জেলা শাখার সদস্য সচিব মোঃ হামিদুর রহমান, লালমনিরহাট জেলা শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ রেনায়েল আলম, সাবেক জেলা আমীর প্রভাষক আতাউর রহমান, সাবেক জেলা আমীর ও জামায়াতের রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চল ইউনিট টিম সদস্য মোঃ আব্দুল বাতেন, খেলাফত মজলিসের লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি মুফতি আবুল কাশেম, লালমনিরহাট জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মোঃ দেলোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবু মূসা, লালমনিরহাট সদর উপজেলা আমীর প্রভাষক মাহিবুর রহমান, শহর আমীর মাওলানা জয়নাল আবেদীন, আদিতমারী উপজেলা আমীর মাওলানা হায়দার আলী, কালিগঞ্জ উপজেলা আমীর মাওলানা রুহুল আমিন, হাতীবান্ধা উপজেলা আমীর প্রভাষক হাছান আলী, পাটগ্রাম উপজেলা আমীর, কবিতা পাঠ করেন বিশিষ্ট কবি, সাবেক জেলা সেক্রেটারি ও পলাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আলাউল ইসলাম ফাতেমী পাভেল, রংপুর জেলা আমীর অধ্যাপক মোঃ গোলাম রাব্বানী, কুড়িগ্রাম জেলা আমীর মোঃ আব্দুল মতিন, জামায়াত নেতা মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম কাজল, রংপুর মহানগর আমীর এটি এম আজম খান।

হাতীবান্ধা উপজেলা হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতি পুস্পজিত বর্মন, তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বিগত সরকার হিন্দুদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারেনি। হিন্দু ধর্মের পরিবার কে জামায়াত দিন- রাতে নিরাপত্তা দিয়েছে। তাদের সাথে আমরা হিন্দুরা আছি এবং এবার ভোটও দিবো। তিনি স্লোগান দিয়ে বলেন, জাগো বাহে হিন্দুরা সবাই এগিয়ে আসো, হিন্দুধর্মের লোক এবার জামায়াতকে ভোট দিবো। তিনি সবাইকে এবারের নির্বাচনে জামায়াতকে ভোট দেয়ার অনুরোধ করেন। এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, সনজিত কুমার বর্মন।

বিশাল জনসভা শেষে আমীরে জামায়াত লালমনিরহাট সাকিট হাউজে বিভিন্ন পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন। পরে তিনি হাতীবান্ধা সির্ন্দুণা সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ এর গুলীতে নিহত হাসিবুল আলমের শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপনের জন্য তার বাড়ি যান। পথে তিনি ৩ টি পথসভায় বক্তব্য রাখেন। রেলওয়ে সোহরাওয়ার্দী মাঠ, শেখ ফজলুল করিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ও মজিদা খাতুন মহাবিদ্যালয় মাঠ। এরমধ্যে মজিদা খাতুন মহাবিদ্যালয় মাঠে মহিলাদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ। পথসভাগুলোতে লোক সমাগম ছিলো চোখে পড়ার মতো।