ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তামাক চাষ, যা স্থানীয়ভাবে ‘বিষপাতা’ নামে পরিচিত। কৃষকদের লাভজনক আয়ের উৎস হলেও, স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর উপজেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিল, আর এবছর তা বেড়ে হয়েছে ১১৫ হেক্টর-অর্থাৎ এক বছরে চাষ বেড়েছে প্রায় ৭০%। তবে স্থানীয় কৃষকরা দাবি করছেন, সরকারি হিসাবের চেয়ে বাস্তবে দ্বিগুণেরও বেশি জমিতে তামাক আবাদ হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ধান ও অন্যান্য শস্যের তুলনায় তামাক চাষে লাভ বেশি হওয়ায় তারা এই ফসলের দিকে ঝুঁকছেন। বিশেষ করে, বড় তামাক কোম্পানিগুলো কৃষকদের সহজ ঋণ, সার ও প্রশিক্ষণ প্রদান করায় তামাক চাষের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তামাক খেতে কাজ করা একাধিক কর্মীরা জানায়, স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য গ্লাভস, মাস্ক ও সুরক্ষামূলক পোশাক পরে কাজ করি এবং দৈনিক ৩০০-৪০০ টাকা পাওয়া যায়। তবে, তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে, যেমন শ্বাসকষ্ট ও চর্মরোগ। স্থানীয় তামাক চাষি কানছু মিয়া বলেন, আমরা জানি তামাক চাষ স্বাস্থ্যকর নয়, কিন্তু কোম্পানিগুলো অনেক সুযোগ-সুবিধা দেয়। তারা ভালো দাম দেয়, সহজ ঋণ দেয়, তাই আমরা চাষ করতে বাধ্য হই।

আরেক চাষি রঞ্জু শেখ বলেন, ধান বা গম চাষে যে পরিমাণ খরচ হয়, তামাকে তা হয় না। কোম্পানিগুলো আগেভাগেই বীজ, সার, এমনকি নগদ টাকাও দেয়। ফলে আমরা সহজে তামাক চাষের দিকে ঝুঁকি। ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোখলেছুর রহমান বলেন, তামাক চাষে কৃষকের সাময়িক লাভ হলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি মাটির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আমরা কৃষকদের তামাকের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ও লাভজনক বিকল্প চাষে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি। মাঠ পর্যায়ে আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছে।