মো. রফিকুল ইসলাম, কালিগঞ্জ, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা জেলায় কালিগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের গ্রাম-গঞ্জে এ বছর হলুদের ফলন খুব ভালো হয়েছে। চাহিদা মিটিয়ে হলুদ জেলার বাহিরে যশোর, খুলনা, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাতে সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে হলুদ থেকে গুড়া উৎপাদন করতে মিল গুলোতে শত শত শ্রমিকের এ পেশায় আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। প্রযুক্তির উন্নয়নে সমন্বিত পদ্ধতিতে মসলা জাতীয় পণ্যচাষের কদর বাড়ায় হলুদ চাষে এ উপজেলার কৃষকরা ঝুঁকে পড়ছেন। উৎপাদন খরচের চেয়ে দাম বেশি পাওয়াতে কৃষকরা হলুদ চাষে আগ্রহী। এবার কালিগঞ্জ উপজেলাতে হলুদের ফলনও ভালো হয়েছে। ভালো ফলন ও দাম বেশি পাওয়ার আশা করছেন চাষীরা। এমনটি জানালেন কালিগঞ্জ উপজেলার শুইলপুর গ্রামের চাষি সাজ্জাত আলী।
এক সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা এ উপজেলাতে হলুদ কিনতে আসত। কিন্তু জমিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও হলুদের দাম কমে যাওয়াতে হলুদ চাষিরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ফলে কৃষকরা মুখ ফিরিয়ে নেয় হলুদ চাষে। হলুদ চাষে টানা দুই যুগের মত চরম মন্দা যায় । প্রযুক্তির উন্নয়ন ও হলুদের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে এবছর আবারো উপজেলায় হলুদের আবাদ বাড়ছে।
কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি অফিসার অসীম উদ্দীন জানান, এবছর উপজেলায় হলুদের আবাদ হয়েছে প্রায় ১২০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে ১৫০ হেক্টর জমিতে হলুদ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কালিগঞ্জ উপজেলার বাগবাটী গ্রামের শ্রী নিমাই চন্দ্র মন্ডল জানান, চাষিরা হলুদের সাথে একই জমিতে, বেগুন চাষ, মেটে আলু, ওলের চাকি চাষ করছে। হলুদের সাথে সাথে একই সাথে এ সকল ফসল অতি দ্রুত ফলানো যায়। এতে কৃষকের নিজের পরিবারের চাহিদা পূরণের পর বাজারে বিক্রি করে অধিক লাভবান হচ্ছে। এ বছর শুকনো হলুদের দাম বেশি থাকায় হলুদ বিক্রিতে গতবারের থেকে লাভ বেশি পাবেন বলে আশা করছেন চাষিরা।
কালিগঞ্জ উপজেলায় হলুদ গাছে এখনও ফুল ধরেনি। চলতি মাসের শেষ দিকে ফুল আসবে বলে চষিীরা আশা করছেন।
কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী কৃষি অফিসার মোঃশফিউল্লাহ জানান, হলুদ বেশ লাভজনক ফসল। কালিগঞ্জে প্রতি হেক্টরে ১০-১৫ টন পর্যন্ত হলুদ উৎপাদন হয়। কিন্তু উপকূলীয় উপজেলা হওয়ার কারণে বেশ কিছুদিন ধরে এখানকার আবাদি জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। এ দুই কারণে উপজেলার কৃষকরা হলুদ আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন চাষিরা। তবে আমরা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের হলুদ আবাদের ক্ষেত্রে সবসময় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকি। পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহিত করি। যার ফলে এবছর আবাদ বেড়েছে।