চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা : সিরাগঞ্জের চৌহালী উপজেলাধীন এনায়েতপুরের চাঁদপুরে যমুনার তীব্র স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তে প্রায় ২৫টি বসত ভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। গবাদি পশু সহ ঘরবাড়ির টিনের চাল চোখের সামনে নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় এলাকা জুড়ে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে বাড়ি-ঘর ছাড়াও মসজিদ, মাদরাসা, সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চ বিদ্যালয় সহ প্রায় ৫ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বিলীন হয়ে যেতে পারে।

রোববার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, কেউ ঘরের খুঁটি খুঁলছে, কেউবা টিনের চাল সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। নারীরা বিছানাপত্র ও রান্নার জিনিসপত্র নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। আশপাশের বহু মানুষ সহ যমুনা পাড়ে বয়স্ক ও শিশুদের ভিড়। গত শুক্রবার বিকেলের দিকে যমুনার তীব্র স্রোত ও ঘূর্ণবর্তের সৃষ্টি হয়ে সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর চরের বসতি লালচাঁন, জুড়ান, সাইফুল, রবি, ইয়াদুল, ডা. এরশাদের বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়ি কয়েক মিনিটের মধ্যে নদীতে চলে যায়।

বয়োবৃদ্ধ আতাহার মন্ডল জানান, ৭৩ বছব বয়সে প্রায় ২৫ বার নদী গর্ভে চলে গেছে বসত ভিটা। তবে এভাবে হঠাৎ করে যমুনার আগ্রাসী থাবায় লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এ গুলো দেখলে কেউ স্বাভাবিক থাকতে পারবে না। বেশ কয়েক বছর ধরেই চাঁদপুর এলাকায় নদী ভাঙনে কয়েকশত বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। অবশিষ্ট এলাকা রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি। এখন আমরা যাবো কোথায় ?

এবিষয়ে সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ জানান, ভাঙন এলাকা থেকে মাত্র ৫৫ মিটার দুরে হাই স্কুল কমপ্লেক্স ভবন। এছাড়া অন্তত ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হুমকিতে রয়েছে। কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিতের দিকে। দ্রুত স্থায়ী তীর সংরক্ষণে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে হবে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে স্কুলগুলো নদী গর্ভে চলে যাবে।

সমাজ সেবক হাফিজুর রহমান, শিক্ষক ইকবাল হোসেন ও আব্দুল মমিন, শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙনের ভয়াবহতা দেখে আমরা হতবাক, চোখের সামনে কয়েশ মিটার এলাকা বিলীন হয়েছে। প্রায় ৩০টি বসত ভিটা নদীতে চলে যাওয়ায় আমরাও আতঙ্কিত। এই চরের আশপাশের অন্তত ১২টি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ বসতি স্থাপন করেছিলো। ভাঙনে সবাই এখন আতঙ্কিত। ক্ষতিগ্রস্ত সকল অসহায় পরিবারকে বিশেষ সহায়তা দেওয়ার দাবি জানাই।

এদিকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে এসে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ পারভেজ জানান, প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা ও বেশ কিছু বসত ভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিং সহ ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।