চট্টগ্রামে এলএনজি সরবরাহে বিঘœ ঘটায় ভয়াবহ গ্যাস সংকটে পড়েছেন নগরবাসী। গত দুই দিন ধরে অধিকাংশ আবাসিক এলাকায় গ্যাস নেই বললেই চলে। গৃহস্থালি রান্নাবান্না থেকে শুরু করে বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্প-কারখানা, সিএনজি স্টেশন এবং হোটেল-রেস্তোরাঁÑসবখানেই সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) সূত্র জানায়, মৌসুমী বায়ুর কারণে বঙ্গোপসাগর বর্তমানে উত্তাল। এতে কক্সবাজারের মহেশখালীতে অবস্থিত ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চট্টগ্রামে প্রতিদিনের স্বাভাবিক ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ কমে নেমে এসেছে ১৬০ থেকে ১৭০ মিলিয়নে।
গ্যাসের স্বল্পতা প্রথম চোখে পড়ে বুধবার সকাল থেকে, যখন নগরীর বাসাবাড়িতে চাপ কমে যায়। দুপুর নাগাদ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে অনেক শিল্প-কারখানায়। সন্ধ্যার পর কিছু এলাকায় গ্যাস একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। রাত ১২টার পর কিছুটা সরবরাহ শুরু হলেও ভোরের আগেই তা আবার বন্ধ হয়ে যায়।
হঠাৎ এ সংকটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী।
নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার গৃহিণী ফাতেমা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি গ্যাস নেই। বাচ্চাদের স্কুলে টিফিন দিতে পারছি না, দুপুরেও রান্না করা সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে হোটেল থেকে খাবার কিনে খাচ্ছি। কোনো কথাবার্তা ছাড়া মনমর্জিতে গ্যাস বন্ধ করাতো কোনো দেশের নিয়ম না।’
চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার গৃহিণী আসমা বেগম ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, “সকালেই ঘুম থেকে উঠে দেখি গ্যাস নেই। বাচ্চাদের টিফিন দিতে পারিনি, দুপুরেও রান্না করা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এভাবে হঠাৎ গ্যাস বন্ধÑএটা কি কোনো সভ্য দেশের নিয়ম হতে পারে?”
এ বিষয়ে কেজিডিসিএলের ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শফিউল আজম খান বলেন, “সাগর উত্তাল থাকায় এলএনজিবাহী জাহাজ থেকে গ্যাস নেওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কিছু এলাকায় সরবরাহ শুরু হয়েছে, ধীরে ধীরে পুরো এলাকাতেই ফিরিয়ে আনার কাজ চলছে।”
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনালই একমাত্র উৎস হওয়ায় বিকল্প কোনো পথ নেই গ্যাস সরবরাহের। ফলে এলএনজি সরবরাহে সামান্য ব্যাঘাত ঘটলেই পুরো অঞ্চলে তার প্রভাব পড়ে।