খুলনার একমাত্র মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে গত বছর জুন থেকে অদ্যাবধি ওষুধ ক্রয়ে সরকারি কোনো অর্থ বরাদ্দ না থাকায় সেবা নিতে আসা রোগীরা ওষুধ থেকে বঞ্চিত। প্রায় ১১ মাস ধরে রোগীরা সরকারি ওষুধ থেকে বঞ্চিত হলেও এ ব্যাপারে নেই কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা। তবে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা অবিলম্বে সরকারি ওষুধ পেতে পারে তার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭০ সালের দিকে প্রসূতি মা ও নবজাতকদের সুচিকিৎসা দেওয়ার জন্য খুলনা প্রেসক্লাবের অদূরে নগরীর স্যার ইকবার রোডস্থ এলাকায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে খুলনা জেলাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা প্রসূতি মা ও নবজাতকদের চিকিসাসেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। বিধি অনুযায়ী অত্র কেন্দ্রে নয়টি পদে জনবল থাকবে। পদগুলো হচ্ছে-তিনজন চিকিৎসক (মেডিকেল অফিসার-ক্লিনিক এবং মেডিকেল অফিসার-এ্যানস্থেসিয়া), একজন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা, দুইজন সহকারি নার্সিং এ্যাটেন্ডেন্ট, একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী, একজন পিয়ন কাম চৌকদার, একজন গাড়ি চালক। অথচ সেখানে বর্তমান জনবল রয়েছে ১৭ জন। সতের জনের মধ্যে আটজনই ডেপুটেশনে।
মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র থেকে জানা যায়, খুলনা জেলার একমাত্র মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র হওয়ায় প্রতিদিন শতাধিক শিশু ও প্রসূতি মায়েরা আসেন এই হাসপাতালে। মাসে শতাধিক স্বাভাবিক ডেলিভারি হয় এখানে। মাসিক অগ্রগতির রেকর্ড চার্ট থেকে প্রাপ্ত হিসেব অনুযায়ী গেল জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১২৪ জন স্বাভাবিক ডেলিভারী ও ২১ জন রোগীর সিজার করা হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে স্বাভাবিক ডেলিভারী রোগীর সংখ্যা ৬৩ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ৬১ জন এবং জানুয়ারি মাসে ১২ জন ও ফেব্রুয়ারি মাসে ৯ জন সিজার করা হয়েছে। মেডিকেল অফিসার-এ্যানস্থেসিয়া মাতৃত্বজনিত ছুটিতে থাকায় বাইরে থেকে সহকারী পরিচালক (ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেকশন) এনে এ্যানস্থেসিয়া করানো হয়। বর্তমানে অত্র মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. শাহেলা আকতার ও মেডিকেল অফিসার ডা. মৌসুমী সাহা আগত রোগীদের সেবা প্রদান করে আসছেন। তবে মেডিকেল অফিসার (এ্যানস্থেসিয়া) ডা. নওরীন সুলতানা (তমা) আগামী ১৫ মে অত্র প্রতিষ্ঠানে যোগদান করবেন বলে কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে। তথ্য মতে, গত ২৭ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এন্ট্রিনেন্টাল কেয়ার ৪০ জন, পেন্টি নেন্টাল কেয়ার ২০ জন, ডেলিভারী ৬ জন, জরুরি সেবা ১টা, এক বছরের শিশু ২০ জন, এক থেকে পাঁচ বছরের শিশু ১০ জন, ইমপ্লান্ট পদ্ধতিতে ৪ জন, আইইউডি পদ্ধতিতে ৬ জন, ভায়া ১০ জন এবং কিশোর-কিশোরী ১০ জনকে সেবা প্রদান করা হয়েছে। এ ব্যাপারে খুলনা জেলার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. শাহেলা আকতার বলেন, খুলনার একমাত্র মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে গত বছর জুন মাস থেকে অদ্যাবদি পর্যন্ত ওষুধ ক্রয়ের সরকারি কোনো অর্থ বরাদ্দ না থাকায় রোগীরা ওষুধ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে বাইরে থেকে ওষুধ ক্রয় করতে হয়।