গ্রাম-গঞ্জ-শহর
সাতছড়িতে দেখা মিলেছে বিপন্ন বন মথুরার সন্ধান
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে সন্ধান মিলেছে বিপন্ন প্রজাতির বন মথুরা পাখি। হবিগঞ্জের ফটোগ্রাফার সাহেদের ক্যামেরায় চলতি সপ্তাহে এ মথুরাযুগল ধরা পড়ে।
Printed Edition

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে সন্ধান মিলেছে বিপন্ন প্রজাতির বন মথুরা পাখি। হবিগঞ্জের ফটোগ্রাফার সাহেদের ক্যামেরায় চলতি সপ্তাহে এ মথুরাযুগল ধরা পড়ে।
সাধারণত জোড়ায় জোড়ায় বা পারিবারিক ছোট দলে থাকে মথুরা। মাটিতে ঘুরে ঘুরে খাবার খুঁজে বেড়ায়। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে- বাঁশবীজ, ডুমুর, বটফল, পিঁপড়া, উইপোকা, ছোট সাপ ও গিরগিটি; যা সাতছড়িতে ব্যাপক হারে পাওয়া যায়। ভোরে ও গোধূলিতে এরা বেশি সক্রিয় থাকে। দিনের বেলা গাছের নিচু ডালে বিশ্রাম নেয়। সকাল ও সন্ধ্যায় নিচু স্বরে মুরগির মতো ডাকে। এরা খুব লাজুক পাখি, মানুষের আনাগোনা টের পেলে দ্রুত লুকিয়ে পড়ে। খুব সহজে তাদের দৃষ্টিতে পড়ে না। পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের একমাত্র সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, রেমা কালেঙ্গা অভয়ারণ্য ও লাউয়াছড়া চিরহরিৎ বনে মাঝেমধ্যে মথুরা দেখতে পাওয়া যায়। এগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম ষড়ঢ়যঁৎধ lophura leucomelanos, ইংরেজি নাম Fazant.)। কালো মথুরা কালচে ভূচর পাখি। আইইউসিএনের তালিকায় পৃথিবীর বিপন্ন পাখির মধ্যে এটি অন্যতম। মথুরার ৯টি প্রজাতির মধ্যে এটি পূর্ব ভুটান, বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারত হয়ে মিয়ানমার এশিয়ার অন্তর্ভুক্ত প্রজাতি। কালো মথুরার মূল আবাস বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, চীন এবং থাইল্যান্ডের বিভিন্ন বনভূমি। তবে এখন তারা বিপন্ন।
মুখ পালকহীন, মুখের চামড়া ও গলায় ঝুলন্ত লতিকা উজ্জ্বল লাল। দেহতলে পুরো কালো রঙের ওপর ইস্পাত-নীল ও বেগুনি চাকচিক্য। স্ত্রী মথুরার দেহে অনুজ্জ্বল বাদামি পালকের ধূসর প্রান্ত আঁশের মতো দেখায়। মাথার চূড়া ও লেজের পালক প্রায় বাদামি। গলা পীতাভ-বাদামি। কোমর ও পায়ের পালকের প্রান্তদেশ ফিকে। চোখের আশপাশের অল্প একটু অংশ পালকহীন ও উজ্জ্বল লাল।
স্ত্রী ও পুরুষ মথুরা উভয়ের চোখ পিঙ্গল থেকে কমলা-বাদামি। উভয়ের লেজ মোরগের লেজের মতো। ঠোঁট সবুজাভ ও শিঙ-বর্ণের ঠোঁটের গোড়া কালচে ও আগা ফিকে। পা ও পায়ের পাতা বাদামি। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখি দেখতে প্রায় স্ত্রী মথুরার মতো, তবে পিঠে কালচে-বাদামি ও পীতাভ ডোরা দেখা যায়।
ফটোগ্রাফার সাহেদ বলেন, গত সপ্তাহে তিনি সাতছড়ি বনে এ মথুরা দেখতে পান এবং ছবি তুলতে সক্ষম হন। কালো মথুরা বনের প্রান্তে ও বনসংলগ্ন খোলা জায়গায় বিচরণ করে। সাতছড়িতে ৭ থেকে ৮ জোড়া মথুরা তারা দেখতে পেয়েছেন, যা বর্তমানে বিপন্ন প্রায়।