বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, বিগত পনের বছর ধরে যারা কুরআনের কথা বলতে দেয়নি, কুরআনের শিক্ষা দিতে দেয়নি এমনকি কুরআনের সমাজ গড়তে দেয়নি জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে তারা শুধু পালাতেই বাধ্য হয়নি বরং এদেশে তারা তাদের রাজনীতি করারও অধিকার হারিয়েছে। সুতরাং এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, যারাই কোরানের বিরোধিতা করবে তারাই ইতিহাসের পাতা থেকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। ইসলামী ছাত্রশিবির সম্পর্কে অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা আপনাদের সন্তানদেরকে শিবিরের হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন। কারণ শিবির কুরআনের শিক্ষা দেয়, নৈতিকতার শিক্ষা দেয়, শিবির মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার শিক্ষা দেয়।’
গতকাল রোববার সকালে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবির আয়োজিত ‘কুরআনিক অলিম্পিয়াড’- এর চূড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবির সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনার দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী, তা’লীমুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা এএফএম নাজমুস সউদ এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর কুতুবউদ্দিন।
মহানগরী সেক্রেটারি রাকিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, সোনাডাঙ্গা থানা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জাহিদুর রহমান নাঈম, মহানগরী ছাত্রশিবিরের অফিস সম্পাদক ইসরাফিল হোসেন, অর্থ সম্পাদক আসিফ বিল্লাহ, সাহিত্য সম্পাদক বেলাল হোসেন, প্রকাশনা সম্পাদক আদনান মল্লিক যুবরাজ, এইচআরডি সম্পাদক সেলিম হোসেন, আইন সম্পাদক আব্দুর রশিদ, মাদরাসা সম্পাদক মুজাহিদুল হক, দাওয়াহ সম্পাদক গোলাম মুয়াজ্জু, ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক ইমরান হোসেন, প্লানিং সম্পাদক নাঈম হোসেন, সোস্যাল মিডিয়া সম্পাদক খায়রুল বাশারসহ প্রমুখ নেতৃবৃব্দ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া এক হাজার অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের পরিবার ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
‘কুরআনিক অলিম্পিয়াড-২০২৫’ এ ১২ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এরমধ্যে সর্বোচ্চ মার্ক হিসাবে এক হাজার জনকে পুরুস্কৃত করা হয়। এতে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের আবিদ ইবনে আশরাফ, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন খুলনা সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের মোহাম্মদ নাবিল খান, তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইয়েদাতুন্নেছা, চতুর্থ স্থান অধিকার করেছেন বিএন স্কুল এন্ড কলেজ খুলনার ফাতিহা আয়াত, পঞ্চম স্থান খুলনা পাবলিক কলেজের মো. ওয়াছিবুর রহমান, ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছেন সেন্ট জোসেফস্ উচ্চ বিদ্যালয় খুলনার কাজী নাবিল আহমেদ, সপ্তম স্থান অধিকার করেছেন খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এ. টি. এম. মুশফিকুর রহমান, অষ্টম স্থান অধিকার করেছেন খুলনা জিলা স্কুলের আজমাইন হোসেন, নবম স্থান অধিকার করেছেন শহীদ জিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সুমাইয়া আক্তার রুমি ও দশম স্থান অদিকার করেছেন খুলনার সরকারি বিএল কলেজের মালিহা তাসনিম। প্রধম স্থান অধিকারি সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের আবিদ ইবনে আশরাফকে লাবটপ, তাফসির গ্রন্থ ও ক্রেস্ট এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকারি খুলনা সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের মোহাম্মদ নাবিল খানের হাতে মোবাইল ফোন, হাদিস গ্রন্থ, ইসলামিক বই ও ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়। এ ছাড়া এক হাজার শিক্ষার্থীর হাতে সান্তনা পুরস্কার হিসাবে পবিত্র কুরআনুল কারীম তুলে দেয়া হয়।
উদ্বোধনী বক্তব্যে খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবির সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সবসময়ই এমন আয়োজনের মাধ্যমে ছাত্রসমাজকে কুরআনের আলোয় আলোকিত করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। পবিত্র কুরআন হচ্ছে আল্লাহর সর্বশেষ ও চূড়ান্ত হিদায়াত, যা সমগ্র মানবজাতির জন্য পথনির্দেশনা। এটি কেবল ধর্মীয় অনুশাসন নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এই মহাগ্রন্থের আলোকে গড়ে উঠা একটি প্রজন্মই পারে এই সমাজ, দেশ ও জাতিকে আলোর পথে পরিচালিত করতে।