কাপাসিয়ায় স্মরণসভাকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিত হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম ডা. মোহাম্মদ সানাউল্লাহর পুত্র মেজর (অব.) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ (মিঠু)।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১ মে) গাজীপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বিস্তারিত অভিযোগ তুলে ধরেন।
তিনি জানান, ৩০ এপ্রিল কাপাসিয়া উপজেলা চত্বরে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভা ছিল একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি, যার জন্য প্রশাসনের লিখিত অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ত্যাগের মুহূর্তে কাপাসিয়া বিএনপির একটি প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। এই বর্বরোচিত হামলায় অন্তত তিনটি গাড়ি ভাংচুর করা হয় এবং আনুমানিক সাত লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
মেজর (অব.) শফিউল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতা শাহ্ রিয়াজুল হান্নান ও খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার নির্দেশেই এই হামলা সংঘটিত হয়েছে। হামলাকারীরা ইট-পাটকেল ছুঁড়ে, লাঠি দিয়ে ভাংচুর চালিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য রাজনৈতিক স্লোগানও দেয়। তিনি অভিযোগ করেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও ওসি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এই ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. আবুল হাসেম চৌধুরী কাপাসিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং: ০৬, তারিখ: ৩০/০৪/২০২৫ ইং)।
মেজর (অব.) শফিউল্লাহ আরও বলেন, সহিংস রাজনীতির মাধ্যমে গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করার চেষ্টা কখনো সফল হবে না। বিএনপি চেয়ারপারসনের নির্দেশে এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল সবসময় শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পন্থায় রাজনীতি করে এসেছে। প্রশাসনের নিরপেক্ষ তদন্ত, হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, রাজনৈতিক সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এবং প্রশাসনের দায়িত্বশীল ভূমিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোঃ সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. এম এ হাশেম চৌধুরী, এবং কাপাসিয়া বিএনপির সাবেক সভাপতি খলিলুর রহমান প্রমুখ।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করা হলে বিএনপি নেতা শাহ্ রিয়াজুল হান্নান বলেন, “ঘটনার দিন আমাদের পূর্বনির্ধারিত শান্তিপূর্ণ মিছিল ছিল। কিন্তু অভিযোগকারী পক্ষ তাদের গাড়িবহর মিছিলের ভেতরে ঢুকিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হন। তাদের কেউ কেউ গাড়ির ধাক্কায় পড়ে যায়, আহত হয়। এ ঘটনার পর আমরা নিজ উদ্যোগে কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, একতরফা এবং বিভ্রান্তিকর।