গাজীপুরে আলোচিত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৮ জনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) দাখিল করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ জানায়, গত ৭ আগস্ট রাতে চান্দনা চৌরাস্তায় নির্মমভাবে খুন হন সাংবাদিক তুহিন। ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ, তথ্য-প্রযুক্তি এবং গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৮ জনকে শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মূল অভিযুক্ত কেটু মিজান ও তার স্ত্রী গোলাপীসহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ), রবিউল হাসান জানান, “ঘটনাস্থলের উপস্থিতি, অস্ত্রের ব্যবহার, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি এবং প্রযুক্তিগত প্রমাণ বিশ্লেষণ করে তাদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হওয়া গেছে। চার্জশিট ইতোমধ্যে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার জন্য পুলিশ সচেষ্ট থাকবে।”

এদিকে নিহত তুহিনের স্ত্রী ফরিদা আক্তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “চার্জশিট দাখিলে আমরা স্বস্তি পেয়েছি। তবে এখনো তুহিনের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার হয়নি। আমি সেই মোবাইল উদ্ধারের জোর দাবি জানাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

তদন্তে উঠে আসে, পরিকল্পিতভাবে “হানি ট্র্যাপ” ব্যবহার করে বাদশা মিয়া নামে এক যুবককে টার্গেট করেন আসামি গোলাপী। একপর্যায়ে বাদশা মিয়ার সঙ্গে গোলাপীর বাকবিতণ্ডা হলে গোলাপীর সহযোগীরা চাপাতি, দা ও সুইচগিয়ার চাকু নিয়ে শাপলা ম্যানশনের সামনে বাদশা মিয়াকে কোপাতে থাকে।

এ সময় গোলাপী চিৎকার করে বলেন—“তুহিন সাংবাদিক ভিডিও করছে।” সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসীরা বাদশা মিয়াকে ফেলে রেখে তুহিনকে লক্ষ্য করে ধাওয়া করে। প্রথমে মিজান দা দিয়ে আঘাত করে, পরে স্বাধীন, সুমন, আরমান, আলামিন ও ফয়সাল এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। একপর্যায়ে মিজান তুহিনের মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। গোলাপী তখন আবার চিৎকার করে বলে পুলিশ আসছে, এরপর সবাই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

পরে নিহতের বড় ভাই মো. সেলিম বাদী হয়ে বাসন থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলার প্রেক্ষিতেই পুলিশ তদন্ত শেষে ৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করল।