মুহাম্মদ দিদার হোসাইন, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম : টানা ৭-৮ মাস ধরে মিলছেনা বৃষ্টির দেখা, তীব্র গরমেও হাহাকার অবস্থা, বেশকিছু নলকূপেও উঠছেনা পানি, খাদ্য পানীর সংকটে পড়েছে বাঁশখালী উপকূলের হাজার হাজার মানুষ, মাঝ পথে পানি সংকট দেখা দেয়াতে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকরাও।
টানা তিনদিন যাবত বাঁশখালীর গণ্ডামারা, সরল, বড়ঘোনা, পশ্চিম চাম্বল, শেখেরখীল, ছনুয়া, কাথরিয়া, বাহারচড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় উপকূলের বেশিরভাগ নলকূপই অকেজো হয়ে পড়ায় খাদ্য পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া ডিপকল পানি নির্ভরশীল দুশ্চিন্তায় পড়েছে শত শত কৃষক পরিবারের মানুষ। যে কয়েকটি ডিপকলে পানি উঠে তাতে সন্ধ্যা আসলেই এক কলসি পানির আশায় কলসি হাতে নিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে উপকুলের শত শত নারী-পুরুষ। একদিকে গরমের তীব্রতা বৃদ্ধি অপরদিকে সুপেয় পানির সংকটে বাঁশখালীর পশ্চিমাঞ্চলজুড়ে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে।
এরই মধ্যে দুশ্চিন্তায় পড়েছে অনেক কৃষক, কৃষি মাঠে দুলছে সোনার ফসল, তবে পানির সংকটের কারণে ফসল কাটার আগেই দুশ্চিন্তায় পড়েছে অনেক কৃষক। সম্প্রতি অধিকাংশ গভীর নলকূপ থেকে বিদ্যুৎ চালিত মোটরের সহযোগিতায় পানি উত্তোলন করার কারণে এমনিতেই সাম্প্রতিকের চাপাকল গুলো অকেজো হয়ে গেছে। এরই মধ্যে দীর্ঘ ৭-৮ মাস ধরে বৃষ্টি না হওয়ার ফলে উপকূলে মোটর চালিত বেশিরভাগ নলকূপে উঠছেনা পানি। এতে পুরো উপকূল জুড়ে তীব্র খাদ্যপানি সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও যেসব ডিপকলের মাধ্যমে ব্যুরো চাষ করা হয়েছে, ওইসব ডিপকলের বেশিরভাগেই অকেজো হয়ে পড়েছে, যার ফলে অনেক কৃষক ফসল কাটার আগেই দুশ্চিন্তায় পড়েছে বলে স্থানীয় কৃষক সুত্রে জানা গেছে।
মোঃ আনোয়ার, ইলিয়াস, জসিম উদ্দিন, আবুল কালাম, মোঃ বাদশাহ, ফোরকান, হেলাল, মান্নান, সেলিম, আবুল হোসেন, বাইশ্যা মিয়া, মোজাম্মেল, সৈয়দুল আলমসহ বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, কানি প্রতি ৭-৮ হাজার টাকা পানির খরচ দিতে হচ্ছে, এরপরেও মাঝ পথে এসে বেশকিছু ডিপকলে পানি পাওয়া যাচ্ছেনা, যার ফলে শত শত একর কৃষি জমি শুকিয়ে যাওয়াতে জমিতে ফাটল সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যুরো চাষে ব্যয়বহুল খরচ বহন করতে এমনিতেই কৃষকদের কষ্টসাধ্য হয়, এরই মধ্যে পানি সংকট দেখা দেয়াতে ধান কাটার আগেই দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকরা।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু ছালেক জানান, বাঁশখালীতে এবছর ১১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে ব্যুরো চাষ হয়েছে, বিগত সময়ের তুলনায় এবছর ভালো ফলন হয়েছে, আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে কৃষকরা আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করতে পারবে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রণোদনাসহ নানা ধরনের সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যে কৃষি খ্যাতকে আরও সম্প্রসারিত করতে মাঠপর্যায়ে কৃষকদেরকে সার্বক্ষণিক ভাবে আমরা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। আর পানি সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে পানির সংকট তৈরি হলে সেটি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখি, তবে প্রাকৃতিক কারণে যদি পানি না উঠে সেক্ষেত্রে আমাদের করার কিছুই থাকেনা।