বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন- দেশের র্আদশিক সংকট মোকাবেলায় যুব সমাজ বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করতে পারে । তিনি গত শনিবার বিকেলে তারাগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় ওয়াকফ্ এষ্টেট কামিল মাদরাসা অডিটোরিয়ামে আয়োজিত যুব সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের সভাপতি মোহাম্মদ কাজী শামসুল হুদা সমাবেশে সভাপতিত্বে করেন।

এর আগে সকালে মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম ওয়াকফ্ এষ্টেট কামিল মাদরাসা অডি টোরিয়ামে মাদরাসার শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এসময় তিনি বলেন, শিক্ষকরা সমাজ পরিবর্তনে বিরাট ভুমিকা রাখতে পারে। বিগত জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে ছাত্র-যুবক-জনতার সাথে কাঁধ মিলিয়ে শিক্ষকগন সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

পরে দুপুরে মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম তারাগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের উদ্যোগে স্থানীয় ওয়াকফ্ এষ্টেট কামিল মাদরাসা অডিটোরিয়ামে আয়োজিত মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। তারাগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর এস এম আলমগীর সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।

যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন- দেশের সকল স্বৈরাচার বিরোধী গণ আন্দোলনে যুব সমাজ ছাত্র জনতার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সব সময় অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বার বার পরিবর্তন হলেও, দেশপ্রেমিক সৎ মানুষের অভাবে সেই সাফল্য দেশবাসীর কোন কল্যাণে আসেনি। এবারে ২৪ শের জুলাই-আগষ্টের বিপ্লবের সাফল্য নৈতিক চরিত্রের আদর্শ দিয়ে রক্ষা করতে হবে যুব সমাজকেই।

তিনি বলেন, খুনী স্বৈরাচারের দৃষ্টান্ত মূলক বিচার এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরী করে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা নির্বাচন চাই। এ লক্ষ্যে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে স্থায়ী ভাবে নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে ব্যালট ডাকাতি প্রতিরোধ করতে যুব সমাজকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা সচ্ছ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে সকল মানুষের ভোটাধিকার এবং অংশ গ্রহনের মাধ্যমে সৎ লোকের শাষন এবং আল্লাহর আইন সমাজে প্রতিষ্ঠা করে দেশের ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চাই। দুর্নীতি মুক্ত সমাজ এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জামায়াতে ইসলামীর ২ জন মন্ত্রী ৩ টি মন্ত্রনালয় পরিচালনা করে সৎ লোকের শাষন ব্যবস্থার উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে একটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগও জামায়াতের ঘোরতর শত্রুরা কেউ প্রমান করতে পারেনি। এটাই জামায়াতে ইসলামীর আর্দশিক বৈশিষ্ট।

যুব ও মহিলা সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রংপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ এনামুল হক, সাবেক জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুল গনি, জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল হান্নান খান ও অধ্যক্ষ আব্দুল গনি, বদরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা কামরুজ্জামান কবির, মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান শিমুল, বদরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর শাহ্ মুহাম্মদ রুস্তম, তারাগঞ্জ উপজেলা যুব বিভাগের সেক্রেটারি প্রভাষক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিষ্ট জালিম শাহী বিগত ১৪ বছর আমাকে মিথ্যে মামলা এবং কাল্পনিক সাক্ষ্যে ফাঁসীর আদেশ দিয়ে জেলে রেখে কন্ঠ রোধ করেছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে এখন আমি মুক্ত ভাবে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কাজ করছি। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত নিজেকে এ কাজে উৎর্সগ রাখবো ইনশায়াল্লাহ। তিনি বলেন, বিগত সময়ে ফ্যাসিষ্ট স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার ভিন্নমতের রাজনৈতিক দলের লাখ লাখ নেতা-কর্মীকে হত্যা, জেল-জুলুমের শিকার করেছে। আল্লাহ এই জুলুমের পরিনতিতে জুলাই-আগষ্টের বিপ্লবে ছাত্র-যুবক-জনতার গণঅভ্যুথ্বানের মাধ্যমে তাদের জীবন উৎসর্গের বিনিময়ে জালিম শাহীর পতন ঘটেছে। দেশ-জাতির কল্যাণে সেদিন ছাত্র-যুবক-জনতার রক্তের বিনিময়ে সৃষ্ট বিপ্লবের পরিনতিতে জালিমরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তিনি বলেন, দেশ প্রেমিকরা কখনও পালয় না। ওরা দেশকে ভারতের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল বলেই এমপি-মন্ত্রী নেতা-কর্মী আতœীয় পরিজনসহ জনতার রোষানলে পড়ে ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এদের দ্বারা দেশের মানুষের কখনও কোন কল্যাণ বা ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। তাই সময় এসেছে দেশের ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র-যুবক-জনতার দেশপ্রেমের দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলে সুখী বাংলাদেশ গড়তে।