বগুড়ায় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উদীচি শিল্পী গোষ্ঠী ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে শহরের সাতমাথা মোড় ও শহীদ খোকন পার্ক এলাকায় এঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় সংগীত অবমাননার অভিযোগ এনে উদীচি শিল্পী গোষ্ঠী বুধবার সাতমাথা মুক্তমঞ্চে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া কর্মসূচি ঘোষণা করে। একই সময়ে ফ্যাসিস্ট ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চেরও বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ উদীচি শিল্পী গোষ্ঠীকে সাতমাথায় কর্মসূচি না করার পরামর্শ দিলে তারা খোকন পার্কে গিয়ে কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেয়। একপর্যায়ে একদল বিক্ষুব্ধ তরুণ সেখানে গিয়ে তাদেরকে বাধা দেয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পরে বিক্ষুব্ধ তরুণরা উদীচি কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। সেখান থেকে ফিরে তারা মুক্তমঞ্চে সমাবেশ করে। বগুড়া উদীচীর সাধারণ সম্পাদক সাহেদুর রহমান বিপ্লব বলেন, “আমরা কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করলেও হামলাকারীরা সেখানে এসে পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলা চালায় এবং আমাদের অফিসের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে দরজা ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করা হয়। এদিকে এনসিপি নেতারা দাবি করেছেন এ ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এনসিপি’র বগুড়া জেলা সংগঠক আহমেদ সাব্বির বলেন, “ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের ডাকে আয়োজিত সমাবেশে এনসিপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।” এদিকে, ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চের নেতাকর্মিরা অচেনা হওয়ায় তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমান বলেন, “ঢাকার উদীচীর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে খোকন পার্কে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার আয়োজন করা হয়। একই সময় সেখানে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। পরে টেম্পল রোডে অবস্থিত উদীচীর কার্যালয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।”
এদিকে, উদীচির কর্মসূচিতে ইসলামী ছাত্রশিবির হামলা করেছে মর্মে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে শিবির। ইসলামী ছাত্রশিবির বগুড়া শহর শাখার সভাপতি রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, “এই ঘটনার সাথে ছাত্রশিবিরের দূরতম সম্পর্ক নাই। পতিত ফ্যাসিস্টের দোসর কিছু মিডিয়া কাল্পনিকভাবে এই ঘটনার সাথে শিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। আমরা এই জঘন্য মিথ্যাচারের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে সত্য ঘটনা উদঘাটনের জন্য সাংবাদিক বন্ধুদের প্রতি উদাত্ব আহ্বান জানাচ্ছি।”