একেএম আবদুর রহীম, ফেনী : সম্প্রতি ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আসন্ন কোরবানির ঈদে গরু মহিষের দাম একটু চড়া হবে বলেই ধারনা করা হচ্ছে। তবে গত কয়েক বছর দেশীয় খামারিদের এবং কৃষকদের মাধ্যমে কোরবানীর পশুর চাহিদা পূরণ হয়েছে। সেই সাথে এখন চট্টগ্রামের পাহাড়িয়া এলাকা থেকে আসছে ‘গয়াল’। ফেনীর মহিপাল থেকে শামসুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী সাতকানিয়া উপজেলার কেঁউচিয়া বাইতুল ইজ্জত গেছেন মেজবানির জন্য গয়াল কিনতে। ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় কিনেছেনও একটি। গত বছরও তিনি আরেকটি অনুষ্ঠানের জন্য ১ লাখ ৮ হাজার টাকায় একটি গয়াল কিনে নিয়ে এসেছিলেন। শুধু অনুষ্ঠানের জন্য নয়, ব্যবসার জন্যও তিনি গয়াল কেনেন। শামসুল ইসলাম বলেন, গরু-মহিষের চেয়ে গয়ালে গোশত পাওয়া যায় অনেক বেশি, স্বাদও চমৎকার। তাছাড়া গয়াল ভিন্নধর্মী প্রাণী, এটি এলাকায় নিয়ে আসলে দেখতে লোকজনের ভিড় জমে যায়। তাই বিক্রিও হয় ভালো দামে। তিনি সাতকানিয়া থেকে নিয়মিত গয়াল কিনে ফেনী নিয়ে আসেন। শামসুল ইসলাম শুধু নয়, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, নোয়াখালীর চৌমুহনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে গয়াল কিনে আনা আরও অনেকে একই কথা বললেন।
গোশতের চাহিদা পূরণের জন্য পাহাড়ি গয়ালের ব্যবহার সম্পর্কে ফেনী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, দেশে এখন গরু-মহিষের দাম বেড়ে গেছে, পশুর দেশীয় উৎপাদনের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এই সময়ে গোশতের চাহিদা পূরণে গয়ালের ব্যবহার একটি ভালো লক্ষণ। তিনি বলেন, গয়ালের ব্যবহার জনপ্রিয় হলে দেশি-বিদেশি পশুর ওপর নির্ভরতা যেমন কমে আসবে, তেমনি গয়ালের বাণিজ্যিক লালন পালনে মানুষ আকৃষ্ট হবে। গয়ালের গোশতে কোলেস্টেরল কম হওয়ায় এটি মানবদেহের জন্য সবসময় কম ঝুঁকিপূর্ণ। গয়াল লালন পালনে খরচ খুব কম হয়ে থাকে এবং এদের দেহে কোনো ধরনের কৃত্রিম ওষুধ প্রয়োগ করার প্রয়োজন পড়ে না। গয়ালের গোশত সবার জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত বলেও জানান প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
গয়াল ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায় শুধু ফেনীর মহিপাল নয়, সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া বাজার, ছাগলনাইয়ার চাঁদগাজী বাজার, সোনাগাজীর বক্তারমুন্সি ও মোতিগঞ্জ বাজার সহ আরও কয়েকটি স্থানে গয়াল বিক্রি হয়ে থাকে। শীত মৌসুম এলে বিভিন্ন স্থানে ওরস, মিলাদ মাহফিল, মেজবান উপলক্ষে গয়ালের বেচাকেনা বাড়ে।