গত বছরের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে “জুলাই জাগরণ নবউদ্যমে বিনির্মাণ” শীর্ষক একটি র‌্যালি চট্টগ্রাম নগরীতে অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালিটি বহদ্দারহাট মোড় থেকে শুরু হয়ে মুরাদপুর হয়ে ২ নম্বর গেইট এলাকায় এক সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুল মোহাইমিন পাটোয়ারী, চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন রনি, মহানগর উত্তর সভাপতি তানজীর হোসেন জুয়েল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মোহাম্মদ আলী এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীবৃন্দ। বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে আয়োজিত সমাবেশে অতিথিবৃন্দ বলেন, জুলাই বিপ্লব ছিল ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জনতার রক্তাক্ত জবাব, যা আজও বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অমলিন চেতনা হয়ে আছে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুল মোহাইমিন পাটোয়ারী বলেন, “জুলাই বিপ্লবের এক বছর পার হলেও এখনও ফ্যাসিবাদী আমলে দায়ের করা রাজনৈতিক মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়নি। বরং দেখা যাচ্ছে, সেই গণহত্যার আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা দ্রুত বিচার ও বিচার বিভাগের কাঠামোগত সংস্কার দাবি করছি।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সরকারে থেকেও কেউ কেউ আন্দোলনের অংশীদারদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এই অপপ্রয়াস শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী। নতুন বাংলাদেশে এই বেঈমানদের কোনো স্থান হবে না।” বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহানগর উত্তর সভাপতি তানজীর হোসেন জুয়েল বলেন, “এই দিনে আমাদের অনুভূতি আনন্দ ও বেদনায় মিশ্রিত। গতবছর এইদিনে মেডিকেলের মর্গগুলো লাশে ভরে গিয়েছিল, আর একই দিনে শতাব্দীর কুখ্যাত স্বৈরাচার পালাতে বাধ্য হয়েছিল। অথচ আজ কিছু রাজনৈতিক শক্তি এই আন্দোলনের ভূমিকা অস্বীকার করছে—আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।” মহানগর দক্ষিণ সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন রনি বলেন, “৩৬ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে আজ আমরা ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করতে যাচ্ছি। এই ঘোষণাপত্রে শহীদ ও আহতদের পূর্ণ স্বীকৃতি ও পুনর্বাসনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত না হলে, জাতি নতুন অভ্যুত্থানের দিকে ধাবিত হবে।” চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মোহাম্মদ আলী তার বক্তব্যে বলেন, “গত বছরের এই দিনে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিবাদী শাসকের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলাম। ভবিষ্যতেও যদি আমরা শাহাদাতের আকাক্সক্ষা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকি, তবে আর কোনো ফ্যাসিবাদ বাংলার মাটিতে টিকে থাকতে পারবে না।”