খুলনার পূর্ব রূপসার পৃথক দু’টি স্থানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একজন সন্ত্রাসী হামলার হাত থেকে রক্ষা পেলে অপরজন গুলীবিদ্ধ হয়েছে। আক্রান্ত দু’জনই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে। রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মাহফুজুর রহমান বলেন, পূর্ব রূপসার বাগমারা এলাকার বাসিন্দা রুবেলকে হত্যার উদ্দেশে বাগমারা বাসস্টান্ড সংলগ্ন ব্যাংকের মোড়ে আক্রমণ করে সন্ত্রাসীরা। মাগরিবের নামাজের সময় হওয়ায় রুবেল ঘটনাক্রমে সন্ত্রাসী হামলার হাত থেকে বেঁচে যায়। ওই সময়ে মুসল্লিদের উপস্থিতি বেশী হওয়ায় সন্ত্রাসীরা পিস্তল বের করেও তাকে হত্যা করার জন্য গুলী করতে পারেনি। উপস্থিত জনতা বেশি থাকার কারণে সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেল নিয়ে পলিয়ে যায়। রুবেল ওই এলাকার মাদক ব্যবসায়ী বলে তিনি জানান। অপরদিকে এ মিশন ব্যর্থ হয়ে সন্ত্রাসীরা রামনগর এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী রবিউল হক রবিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলী ছুড়ে। কিন্তু গুলীটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় তার বাম হাতে বিদ্ধ হয়। স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় খুলনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, মাদক ব্যবসা এবং এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায় ওই এলাকায় গুলীবর্ষণের ঘটনা ঘটে। গত ৫ মাস আগে আহত মাদক ব্যবসায়ী পারভেজকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলী করে। কিন্তু চিকিৎসা নেওয়ার পর পারভেজ বেঁচে যায়। আহত রবি ওই এলাকার চিহ্নিত দুর্বৃত্ত বিকুল গ্রুপের সদস্য।
রূপসায় দোকান লুট ও বাড়িতে হামলা, আহত ১০ : খুলনার রূপসা ও মোল্লাহাট সীমান্ত এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দোকান লুট ও বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে, আহতদের মধ্যে ৩ জনকে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন, লিমন ফকির (২২), জাহিদুল ফকির (৩০) ও রাসেল ফকির (৩২)। ঈদের দিন (সোমবার) রাত ৭টার দিকে রূপসা উপজেলার বামনডাঙ্গা বাজারে তিনটি দোকান লুট ও মঙ্গলবার সকালে মোল্লাহাটের বুড়িগাঙনী গ্রামের ফকির বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক বুড়িগাঙনী গ্রামের লিটন ফকির বলেন, ঈদের দিন ফাকা মাঠে ঘুরতে যাওয়া আমাদের এক ছেলের সাথে বামনডাঙ্গা এলাকার এক ছেলের ঝগড়া হয়, তুচ্ছ ওই ঘটনার জেরে রাত ৭টার দিকে বামনডাঙ্গা এলাকার রুহুল মিনা ও ফরহাদ মিনার নেতৃত্বে ১৫/২০ জন দুষ্কৃতকারীরা আমার দোকানে হামলা চালায়। এসময় আমি দোকানের মালামালের আড়ালে লুকানোর চেষ্টা করি, তবু দোকানের মধ্যে ঢুকে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে যখম করে, তখন আমাকে উদ্ধার করতে আসা লোকজনকেও কুপিয়ে ও পিটিয়ে যখম করা সহ প্রকাশ্যে সাত লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। এ ঘটনায় ওই রাতেই সংশ্লিষ্ট রূপসা থানায় অভিযোগ করি। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। থানায় অভিযোগ করার কারণে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকালে আবারো আমাদের বাড়িতে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। এ ঘটনার যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন লিটন ফকির। এছাড়া দোকান মালিক দুলাল ফকির বলেন, তার দোকানে হামলা ও লুটপাটের মাধ্যমে লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী চা দোকানী কালা মিনা বলেন, তার দোকানেও ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। সংশ্লিষ্ট গাংনী ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ঈদের রাতের ঘটনা মিমাংসার চেষ্টা করি, পরেরদিন আবারো হামলা করার ঘটনা আরো দুঃখজনক। তবে মিমাংসার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। ওই সব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিপক্ষের এনামুল মিনা ও ইমা বেগম বলেন, আমাদের উপর ফকির বাড়ির লোকজন সকাল বেলা হামলা চালিয়েছে। আমরা পালিয়ে রক্ষা পেলেও আমাদের অনেকে আহত হয়েছে। রূপসা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান জানান, ওই ঘটনায় রাতে এবং সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।