শফিকুল ইসলাম, গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ): এক সময়ে গোমস্তাপুর উপজেলাসহ বরেন্দ্র জনপদের মাঠেঘাটে, বন-জঙ্গলে, গাছে গাছে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখা গেলেও কালের আবর্তে এখন আর চিরচেনা পাখিগুলোর দেখা মেলে না। পাখির কলরবে মুখর বরেন্দ্র জনপদ এখন পাখিশূন্য হতে চলেছে।
একজন প্রবীণ ব্যক্তি জানান, আমাদের বরেন্দ্র অঞ্চলে পাখির কিচিরমিচির সেই শিহরণ জাগানো শব্দ, সেই সুর এখন আর শোনা যায় না। সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় বাঁশের ঝাড়, আমের বিলগুলোতে শত রকমের পাখি দেখা যেত আজ তা আর চোখে পড়ে না। তিনি আরো জানান, ওই সময়ে একশ্রেণীর সৌখিন পাখি শিকারি পাখি মেরে এনে ভুরিভোজ করতেন। আর এক শ্রেণীর সৌখিন পাখি শিকারি খুব সুকৌশলে পাখিগুলো ধরে এনে খাঁচাবন্দি করে পালন করতেন।
একজন পরিবেশবিদ জানান, কয়েক বছর আগেও বরেন্দ্র জনপদের মানুষের ঘুম ভাংতো পাখির ডাকে। পাখির কলকাকলিই বলে দিত এখন সকাল।
তিনি আরো জানান, বনে-জঙ্গলের অপরূপ দৃশ্যপট যেমন দিন দিন পাল্টাচ্ছে। তেমনি পরিবেশ দূষণ, নির্বিচারে গাছ কর্তন, জমিতে কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার, পাখির বিচরণ ক্ষেত্র, খাদ্য সঙ্কট আর জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে বিলুপ্তির পথে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় পাখ-পাখালি। এগুলোর মধ্যে দোয়েল, জলচর, কোকিল, পাঁতি হাস, বক, পানকৌড়ি, ঈগল, রাজহংসী, গাঙচিল, রাজহাঁস, বাজপাখি, দাঁড়কাক, তোতাপাখি, ময়ূর, পায়রা, মাছরাঙা, পালক, শালিক, চড়ই, পেঁচা, শকুনের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাখির আবাসস্থলে গাছ কাটার প্রভাব, বরেন্দ্র অঞ্চলের জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ, বিভিন্ন মৌসুমে পাখি শিকার এবং জলবায়ুসহ পরিবেশের ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে অনেক পাখিই অন্যত্র চলে যাচ্ছে ।
এদিকে পাখি শিকার বন্ধ ও পরিবেশ রক্ষায় এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা সময়ের দাবি বলে সচেতন মহল মনে করে।