সিলেট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে স্থাপিত ‘প্রেস’ ঢাকায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেয়া হয়। গতকাল রোববার সিলেট প্রেসক্লাবে সিলেটবাসীর ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মদন মোহন কলেজের সাবেক সাবেক অধ্যক্ষ কর্নেল (অব.) আতাউর রহমান পীর।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের প্রশাসনে থাকা সিলেট বিদ্বেষী একটি চক্র সিলেটকে উন্নয়ন বঞ্চিত করছে। সিলেট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে স্থাপিত ‘প্রেস’ ঢাকায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া একটি দুষ্টুচক্রের পরিকল্পিত কাজ বলে আ্যয়ায়িত করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে আতাউর রহমান পীর বলেন, গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি সিলেট বিভাগের আওতাধীন ৩৮টি উপজেলায় ভুমি জরিপ কার্যক্রম ১৯৮৭-৮৮ সালে শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে ৫ হাজার ৪শ ৫৭টি মৌজার মধ্যে ৬৮টি মৌজা ছাড়া বাকীসবগুলোর গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। এই ৬৮টি মৌজার মধ্যে মিউনিসিপিলিটি, সদর ও জগন্নাথপুর, গোলাপগঞ্জসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় জরিপ অসম্পূর্ণ রয়েছে। এমনকি, হযরত শাহজালাল (র.)-এর মাজার শরিফ এলাকার খতিয়ান ছাপার কাজ এখনো বাকি। এই অবস্থায় প্রেস স্থানান্তর হলে কাজ আরও বিলম্বিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৃহত্তর সিলেটবাসী বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ করে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখেন। সেই প্রবাসীদের হয়রানি কমাতে ২০১২ সালে তৎকালীন জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার ইউসুফ আলীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সিলেটে একটি মিনি প্রেস স্থাপিত হয়। এরপর থেকে সিলেটের জরিপের কাজ দ্রুততার সাথে এগুতে থাকে। কিন্তু ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ভেতরে থাকা সিলেট বিদ্বেষী একটি চক্র সেই প্রেসটি ঢাকায় স্থানান্তরের চেষ্টা করছে। এর আগে ২০২১ সালে একবার প্রেস ঢাকায় স্থানান্তরের চেষ্টা করলে সিলেটবাসী সোচ্ছার হন। ফলে, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। প্রায় ৪ বছরের মাথায় আবারো সেই চক্র প্রেস স্থানান্তরের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আতাউর রহমান পীর অভিযোগ করে বলেন, জানতে পেরেছি সিলেটের সাবেক জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার কাজী মাহবুব উর রহমান অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে সেটেলমেন্ট অফিসে স্থাপিত প্রেসটি ঢাকায় স্থানান্তরের প্রস্তাব দেন। নানা অনৈতিক কর্মকা-ের কারণে ইতোমধ্যে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। তবুও তার এই প্রস্তাবের কারণে সিলেটবাসী এখন চরম বিড়ম্বনায় পড়তে যাচ্ছেন। এই প্রেস ঢাকায় গেলে সিলেট বিভাগের কাজ দ্রুত শেষ হওয়া নিয়ে দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হবে। অসমাপ্ত মৌজাগুলোর জরিপ কার্যক্রম বিলম্বিত হবে। বিশেষ করে অবৈধভাবে অতিরিক্ত অর্থ কামানোর উদ্দেশ্যে সিলেটের সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি আরো বাড়বে।