রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়েছে। এসময় নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি, ভোটার তালিকায় নাম স্থানান্তরসহ নানা সেবা নিতে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার সত্যতা পেয়েছে দুদক।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজশাহী জেলা নির্বাচন অফিসে অভিযান চালায় দুদক। দুদকের রাজশাহী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমীর হোসেন বলেন, “আমরা সরেজমিনে গিয়ে নগদ টাকা নেয়ার দুটি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। যারা আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ করছে, তারা নতুন এনআইডি, ভোটার স্থানান্তরসহ বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে জনপ্রতি ২৩০ টাকা করে নিচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে দুদুক কমিশনে লিখিত প্রতিবেদন পাঠাবো।” তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের আওতাধীন বোয়ালিয়া থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মশিউর রহমান। তিনি বলেন, “আমাদের অফিসে কেউ হয়রানির শিকার হন না, আমরা কারও কাছ থেকে টাকা নেই না। তবে পাসপোর্টের জন্য এনআইডি যাচাইয়ের কাজ অহেতুক আমাদের কাছে পাঠানো হয়। তখন বাইরে আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা কিছু লোক দু’একশ টাকা নেয়। পাসপোর্ট অফিস চাইলে নিজেরাই এনআইডি যাচাই করতে পারে, সেটা না করে কেন আমাদের কাছে পাঠায়, বুঝতে পারি না।” জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, “দুদক যখন অফিসে আসে, আমি তখন একটি মিটিংয়ে ছিলাম। তাই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারছি না।” উল্লেখ্য, গত ২২ জুন দুদক কমিশনে অভিযোগ করেন একজন ভুক্তভোগী। এর প্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট টিম গঠন করে নির্বাচন অফিসে অভিযান চালানো হয়।
সজল গ্রেফতার : সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের ব্যক্তিগত সহকারী হাসিনুর ইসলাম ওরফে সজলকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত রোববার দিবাগত রাতে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) শাহমখদুম থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গতকাল সোমবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আরএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ রকিবুল হাসান ইবনে রহমান।
গ্রেফতারকৃত হাসিনুর ইসলাম সজল নগরীর শাহমখদুম থানার দক্ষিণ নওদাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। তিনি সাইনুদ্দীন সান্টুর ছেলে এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। পুলিশ জানায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ার আগেই তিনি সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে পরিচিত হন। প্রথমে ব্যক্তিগত ব্যবসা দেখাশোনা করলেও পরে নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য ও বিভিন্ন তদবিরের মাধ্যমে বিস্তৃত প্রভাব গড়ে তোলেন। এর মাধ্যমে তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।