আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং তার স্ত্রী পারভীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন, ঘুষ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করার সিদ্ধান্ত অনুমোদনের তথ্য গতকাল রোববার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার, ঠিকাদারি কাজে কমিশন গ্রহণ, দলীয় পদ ও মনোনয়ন বাণিজ্য, টিআর–কাবিখাসহ বিভিন্ন সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎ এবং বিদেশে পাচারের মাধ্যমে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ মামলা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত সময়ে তাদের নামে অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধি এবং বিপুল পরিমাণ সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেনের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর কমিশন এই দুটি মামলার অনুমোদন করেছে।

অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুদকের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও চাঁদপুরের সাবেক সংসদ সদস্য মায়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৮২ লাখ ৫৫ হাজার ২৬১ টাকার সম্পদ অর্জন করেন এবং তা ভোগদখলে রাখেন। তার নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ‘ঘুষ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের’ মাধ্যমে ২৫৫ কোটি ২৫ লাখ ১১ হাজার ৭৩১ টাকা জমা এবং ২৫৫ কোটি ১২ লাখ ২০ হাজার ২০৪ টাকা উত্তোলন হয়েছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব লেনদেন অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদের উৎস গোপনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়। একই সঙ্গে মায়ার স্ত্রী পারভীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বামীর ক্ষমতার প্রভাব ও সহায়তায় তিনি জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৮ কোটি ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৬৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নামে থাকা ৩৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনকভাবে ১১১ কোটি ৭৪ লাখ ৪ হাজার ৪১১ টাকা জমা এবং ১১১ কোটি ৪৬ লাখ ৩৪ হাজার ৭১২ টাকা উত্তোলনের তথ্য পাওয়া গেছে, যা মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়।