চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে সড়কে গাছ ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতা মো. একরামুল হকের বিরুদ্ধে।
গত বুধবার ভোররাতে গহিরা-হেঁয়াকো সড়কের নারায়ণহাট নন্দীর স্কুল সংলগ্ন এ ঘটনা ঘটে। যুবদলনেতা মো. একরামুল হক উপজেলার ভুজপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তবে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, ‘গভীর রাতে ঘুমেই ছিলাম। চোরাই গাছ কাটা বিষয়ে তিনি কিচ্ছু জানেন না। তবে সকালে লোকমুখে শুনেছেন গাছ কাটা বন্ধ করতে সেখানে কিছু কর্মী রোশের শিকার হয়েছেন। তার সাথে থাকা কেউ অপরাধে জড়িত নন। ফলে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন।’
আটকৃতরা হলেন- মো. জাহেদ (২৫), মো. বোরহান (২৬), আকিব উদ্দিন (২৭), কুদ্দুস মিয়া (৩৫), আশিক (২৫) ও মনা মিয়া (২৯)। তারা সকলেই যুবদলনেতা মো. একরামুল হকের অনুসারী এবং স্থানীয় বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের নারায়ণহাট রেঞ্জের আওতাধীন দাঁতমারা বনবিটের বড়ইতলী এলাকা থেকে রাতের আধাঁরে পারমিট করা বাগানের গাছ কাটার সময় বিক্ষুদ্ধ জনতা ৬ জনকে আটক করে পুলিশে দেন। বড়ইতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছন থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় আটককৃতদের কাছে থাকা ৯টি মোটর সাইকেল এবং কেটে ফেলা বিভিন্ন প্রজাতির ১৫ টি গাছ জব্দ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবু তাহের বলেন, ‘যুবদলনেতা একরামের নেতৃত্বে কিছু যুবক রাতে সেখানে গাছ কেটে নেওয়ার জন্য জড়ো হন। রাত গভীর হলে সাঙ্গপাঙ্গদের দল ভারী হতে থাকে। প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা ঘুমে আচ্ছন্ন হলে সেহরির সময় তারা এসব গাছ কেটে সাবাড় করেন। খবর পেয়ে লোকজন তাদের আটক করে পুলিশে দেন। পুলিশ তাদের থানায় নেওয়ার পথেই ব্যরিকেড দিয়ে গাড়ি গতিরোধ করে গাড়ি ও তাদের চিনিয়ে নেয়া হয়।’
দাঁতমারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শফিউল আজম চৌধুরী বলেন,‘দলের ভাবমুর্তিক্ষন্ন হয় এমন কাজ চরম অন্যায়। এ ধরনের কাজ দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে। যদি বিষয়টির সাথে দলের কেউ জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে।’
দাঁতমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আটককৃতদের নিয়ে নেপচুন চা-বাগান হয়ে থানার দিকে যাচ্ছিলাম। এমন সময় বিএনপি নেতা একরামুল হক ও ছাত্রদল নেতা ইয়াকুব চৌধুরীর নেতৃত্ব শতাধিক লোক সুইচগেইট এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে আটককৃতদের ছিনিয়ে নেন।’
ভুজপুর থানার অফিসার্স ইনচার্য (ওসি) মো. মাহমুদুল হক বলেন, ‘এই মুহুর্তে ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত। আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতনদের জানিয়েছি। খতিয়ে দেখে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’