চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় যুবদলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলীর ঘটনায় এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত আটজন। নিহত ছাত্রদল কর্মীর নাম মো. সাজ্জাদ (২২)। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাত পৌনে ১টার দিকে বাকলিয়া থানার সৈয়দ শাহ রোডের মদিনা আবাসিক এলাকার এক্সেস রোডে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের দুই নেতা এমদাদুল হক বাদশা ও বোরহান উদ্দিনের গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে টানানো ব্যানার খুলে ফেলা নিয়ে বিরোধের জেরেই গোলাগুলীর ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, বোরহান উদ্দিন মেয়র শাহাদাত হোসেনের ছবিসহ একটি ব্যানার টানান সৈয়দ শাহ রোডে। রাতে এমদাদুল হক বাদশার অনুসারীরা গিয়ে সেটি নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে শুরু হয় সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়। এতে সাজ্জাদসহ অন্তত ৮ থেকে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাজ্জাদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের মধ্যে জুয়েল, সাব্বির, শরীফ, ইয়াসিন, একরাম, পারভেজ ও মারুফ নামে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত সাজ্জাদ নগরীর বাকলিয়ার তক্তারপুল এলাকার মো. আলমের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। পরিবারের সদস্যদের ভাষ্যমতে, সাজ্জাদ ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং সম্প্রতি নগরীর পাথরঘাটার একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।
সাজ্জাদের বড় ভাই মো. ইমরান বলেন, ‘মোবারক নামে বিএনপি সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি ফোন করে আমার ভাইকে বাসা থেকে ডেকে নেয়। কয়েক মিনিট পরই গোলাগুলি শুরু হয়। পরে জানতে পারি, ভাই গুলীবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে।’ তিনি আরও জানান, ‘সৈয়দ শাহ রোড থেকে শান্তিনগর পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে দুই পক্ষের মধ্যে গুলী চালানো হয়। মেয়র শাহাদাতের নামে ব্যানার লাগানো নিয়েই এ সংঘর্ষ হয়েছে।’
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি খালি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘ব্যানার লাগানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গুলীবিদ্ধ একজন মারা গেছেন। আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।’
নগর যুবদলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, এমদাদুল হক বাদশা একসময় মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে গত জুলাই মাসে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধেই এই সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ বলেছে, এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।