বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেছেন, বর্তমান বিশ্বে যেখানে শিক্ষা অনেক সময় কেবল চাকরি ও ভোগবাদী জীবনের অবলম্বন হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে ইসলামী শিক্ষানীতি একটি ভারসাম্যপূর্ণ, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গঠনের দিশা দিতে পারে। তাই আজকের বাংলাদেশসহ গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য ইসলামের শিক্ষাদর্শকে শিক্ষানীতির ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। গত বুধবার খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নগরীর আল ফারুক সোসাইটি মিলনায়তনে ইসলামী শিক্ষা দিবস ও জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘শহীদ আব্দুল মালেক ও ইসলামী শিক্ষানীতি : বর্তমান সময়ে এর প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক শিক্ষা সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন ও দপ্তর সম্পাদক ইসরাফিল হোসেনের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক আলী আহমাদ মাবরুর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক নোমান হোসেন নয়ন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, তা'লিমুল মিল্লাত রহমাতিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ এ এফ এম নাজমুস সউদ, ইসলামিক ফোরাম অব হংকংয়ের সভাপতি ড. আজিজুর রহমান আজাদ। অন্যান্যের মধ্যে ছাত্রশিবির নেতা আসিফ বিল্লাহ, এস এম বেলাল হোসেন, আহমেদ সালেহীন, কামরুল হাসান, আব্দুর রশিদ, হাফেজ মুজাহিদুল হক, গোলাম মুয়িজ্জু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রবন্ধ উপস্থাপক আলী আহমাদ মাবরুর বলেন, ইসলামী শিক্ষানীতির প্রকৃত উদ্দেশ্যই যেহেতু ভালো মানুষ তৈরি করা; তাই এর পক্ষে যারা সরব হবেন তারা যদি ভালো মানুষ না হন তাহলে জাতির কোন কল্যাণ হবে না। শহীদ আব্দুল মালেক ও তার ইসলামী শিক্ষানীতি একে অপরের সম্পুরক। এ কারণেই তার শাহাদাতের এত বছর পরও আমরা তার আলোচনা করি। ইসলামী শিক্ষানীতি চালু হলে একজন মানুষ কতটা উন্নত ও উৎকৃষ্ট হয়ে উঠতে পারে, তারই প্রকৃষ্ট উদাহরণ আমাদের শহীদ আব্দুল মালেক।

ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ইসলামী শিক্ষানীতি কেবল ধর্মীয় শিক্ষা নয়; বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এর মূল লক্ষ্য হলো মানুষকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করা, নৈতিক চরিত্র গঠন করা, সমাজকে কল্যাণমুখী করা এবং দুনিয়া-আখিরাত উভয়ের সাফল্যের পথ সুগম করা। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের উদর থেকে জন্ম নেয়া শিক্ষা ব্যব্স্থাকে আধুনিক, যুগোপযোগী ও নৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে পুনর্গঠনের জন্য শিক্ষানীতি, পাঠ্যক্রম, শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, মূল্যায়ন পদ্ধতি ও শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ বিবিধ বিষয়কে সামনে রেখে ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে ৩০ দফা সংস্কার প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে। এ প্রস্তাবনা বিবেচনা করলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে।