খুলনা সড়ক ও জনপদের অধিগ্রহণকৃত সড়কের জমি নিজের নামে প্লট আকারে বিক্রি করছে আবাসন ব্যবসায়ী। এদিকে ভুক্তভোগী ক্রয়কৃত জমি বুঝে না পেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা আল-আমীন শেখ প্রতারণার শিকার হয়ে ভূমি অপরাধ আইন ও প্রতিকার ২০২৩ সালের আইনে বিজ্ঞ আমলী আদালত হরিণটানা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এজাহার সূত্রে জানা যায়, গেল পহেলা জুন ২০২২ সালে বটিয়াঘাটা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে রাজবাধ মৌজার অধীনে ৫৪০৫/২২ নং দলিলে আর এস, ৪৬৪ ও ৮৪৮নং খতিয়ানে জমাখারিজ জমা একত্রিকরণে পৃথক ৪৬১/১নং খতিয়ানের লিখিত সিএস ও এস এ ২৭৭,২৪০নং দাগের স্থলে আরএস ৬৯৫নং দাগের বিলান ৫ কাঠা জমি ক্রয় করেন তাহার স্ত্রী শামীমা খানম। তিনি বিধি অনুযায়ী নাম পত্তনসহ খাজনা প্রদান করেন সরকারি কোষাগারে। যার পরবর্তীতে ক্রয়কৃত নামপত্তন ও আরএস ৪৮২৩ খতিয়ান ভুক্ত হয়। তবে, প্রতারক নেহাল-উদ্দিন ও জগদীশ ঢালী, দুইজন যোগসাজসে আমাকে খুলনা সাতক্ষিরা মহাসড়কে সরকারী অধিগ্রহণকৃত ১১০ ফুট চওড়া রাস্তার জায়গার ৭৫ ফুট জায়গা আমাকে বুঝিয়ে দিতে যায়। আমি যখন জানতে পারি যে আমার সাথে তারা প্রতারণা করছে আমি বিষয়টি নিয়ে খুলনা সওজের নির্বাহী প্রকোশলী ববরাবর একটি আবেদন করি। পরবর্তীতে সওজ থেকে তাদের জায়গা পরিমাপ করে একটি সরকারি পিলার স্থাপনা করে। তবে প্রতিপক্ষ সওজের জমির স্থাপনার পিলার উঠিয়ে ফেলে আমাদের ক্রয়কৃত জমি বুঝিয়ে না দিয়ে জোরপূর্বক প্রাচীর দিয়ে দখল করে। এছাড়া জানা যায় শুধু একজন না এরকম বেশ কয়েকজন আবাসন ব্যবসায়ী আছে যারা একইভাবে সওজের জায়গা প্লট আকারে বিক্রি করে প্রতারণা করছে সাধারণ মানুষের সাথে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোল্লা হাবিবুর রহমান আকন বলেন, এখানে সড়কের অধিগ্রহণকৃত জায়গা কৌশলে আরএস রেকর্ড করে আবাসন ব্যবসয়িরা বিক্রি করেছে। এছাড়া এই নেহাল-উদ্দিন নিজেকে প্রবাসী পরিচয় দিয়ে স্থানীয় ভূমি দস্যুদের দিয়ে প্রতারণা করে আসছে। এর আগে তিনি সোনাডাঙ্গা থানায় একবার আটক হয়ে জামিনে বের হয়ে পুনরায় প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ব্যাংক কর্মকর্তা আলামীনের সাথে তিনি প্রতারণা করেছেন। তার কাছে এই নেহাল উদ্দিন জায়গা বিক্রি করে টাকা নিলেও তাকে জমি বুঝিয়ে দিচ্ছে না। অসহায়ভাবে ব্যাংক কর্মকর্তা কে পেয়ে তাকে সাতক্ষীরা মহাসড়কের জায়গা বুঝিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়টি আমরা এলাকাবাসী সকলে অবগত আছি। ভুক্তভোগী ব্যাংক কর্মকর্তা বিভিন্ন জায়গা ঘুরে কোনো প্রতিকার না পেয়ে মামলা করেছেন। এমনকি আমাকে দিয়ে এই জায়গাটি বালু ভরাট করিয়ে এখন টাকা দিচ্ছে না। তিনি দেশের বাইরে থাকায় তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাকে হুমকি দিচ্ছে। আমার সাথেও প্রতারণা করেছে।
একই কথা ভুক্তভোগী মোল্লা এমামুল হক বলেন, সওজের জায়গা বিক্রি করেছে ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে এছাড়া অন্য একজনের সাথে এমন করেছেন সড়কের মোট দশ শতক জমি যার বাজার মূল্য ১ কোটি টাকা তিনি প্রতারণার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এমনকি ব্যাংক কর্মকর্তার জমির দেয়াল তিনি ভেঙে ফেলে দিয়েছেন তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে। তিনি একটি মার্কেট করেছেন, তবে মার্কেটের জায়াগা কিন্তু ছেড়ে করেছেন সড়কের জমি বাদ দিয়ে । অন্যদের প্রতারণা করলেও তিনি বুঝে সওজের জায়গা ছেড়ে মার্কেট করেছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত নেহাল উদ্দিন দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাকে মুঠো ফোনে ওয়াটসএ্যাপ নাম্বারে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তার আবাসন ব্যবসা দেখভাল করেন মো. রফিক তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন ভাই আমি জমির মূল মালিক না আমি কিছু বলতে পারবো না। আমার কোন কিছু করার নেই।
এ ব্যাপারে খুলনা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তানিমুল হক বলেন, শামিমা খাতুন নামে একজন লিখিত অভিযোগ করেছেন তাকে আমাদের সড়কের জায়গা বিক্রি করে আবাসন ব্যাবসায়িরা প্লট আকারে বিক্রি করছে।
আমরা বিষয়টি সওজের সার্ভেয়ারকে দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি জমি পরিমাপ করবেন পাশাপাশি আমাদের পিলার স্থাপনা করবেন সওজের জায়গায়। সরকারী অধিগ্রহণকৃত জমি নিজের ইচ্ছে মত বিক্রি করবে এটা হবে না। সরকারি জায়গা নিজের মত দখল নিবে বা বিক্রি করবে এটা হবে না, আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিব।