দেশের অন্যতম ব্যস্ত সড়ক নেটওয়ার্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হলো। আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম ধাপের ১৮ কিলোমিটার অংশ।

রোববার (২৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহসানুল হক, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, সৈয়দ মঈনুল হাসান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান, গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন, এডিসি জেনারেল মুতাছিম বিল্লাহ,গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সোহেল হাসান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, জিসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানা, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ভোগড়া বাইপাস থেকে মদনপুর পর্যন্ত বিস্তৃত ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের মে মাসে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এবং পুরো এক্সপ্রেসওয়ে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উদ্বোধিত ১৮ কিলোমিটার অংশে আংশিকভাবে টোল আদায় শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা ও গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক্সপ্রেসওয়েতে সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, একইসঙ্গে এই অংশে কোনো ইউটার্ন রাখা হয়নি। যানবাহনের ধরন অনুযায়ী টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।

এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, আংশিক চালুর ফলে রাজধানীর আশপাশে যানজট উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। পণ্য পরিবহন আরও দ্রুত, সাশ্রয়ী ও কার্যকর হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুরো এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে এটি উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনের জন্য একটি বিকল্প ও নির্ভরযোগ্য রুট হিসেবে কাজ করবে। এতে যানজট কমার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

ঢাকার ভেতরে প্রবেশ না করেই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী অভিমুখী যানবাহন দ্রুত যাতায়াত করতে পারবে। এতে ঢাকার যানজট কমবে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস পাবে এবং পণ্য পরিবহনে সময় ও ব্যয় সাশ্রয় হবে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার যানবাহন ঢাকা বাইপাস সড়ক ব্যবহার করছে, যার ৬০% পণ্যবাহী ট্রাক ও ট্রেইলার। প্রকল্প পুরোপুরি চালু হলে এ সংখ্যা বহুগুণে বাড়বে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, এই সড়ক শুধু যান চলাচলের গতি বাড়াবে না, বরং শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

ঢাকা বাইপাস সড়কটি পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের সাথে কাঞ্চন ইন্টারচেঞ্জের মাধ্যমে যুক্ত হবে। এর ফলে রাজধানীর উত্তরাংশ (মিরপুর, উত্তরা, মহাখালী) থেকে সিলেট ও চট্টগ্রামগামী যানবাহনের জন্য দ্রুততম বিকল্প রুট তৈরি হবে। এতে যাত্রাবাড়ীসহ ঢাকার মূল প্রবেশমুখগুলোর চাপ কমবে এবং ঈদসহ সারা বছরের যানজট প্রশমনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।