কুমিল্লার মুরাদনগরে থানায় হামলাকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। করছে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা। এরই মাঝে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা উল্টো পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল মানববন্ধন এবং সাংবাদিক সম্মেলন করে তাদের আধিপত্য প্রকাশ করছে। সর্বত্র চাঁদাবাজি বেড়েছে দ্বিগুণ। এতে জনসাধারণের মাঝে ভীতি এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে। থানায় হামলার ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উল্টো পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২৪ মার্চ মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাদের উপর আক্রমণ করা হয়। এ ঘটনায় চাঁদার রশিদসহ রহিমপুর গ্রামের আবুল কালামকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতারা থানায় অভিযোগ দিতে এলে চাঁদাবাজ আবুল কালামের অনুসারীরা তাদের উপর পুনরায় আক্রমণ করে ও আসামী ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় পুলিশ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ফয়সাল বাদি হয় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ ৬ জনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে থানায় হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের নামে দুটো মামলা থাকলেও পুলিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলার সদর, কোম্পানীগঞ্জ, রামচন্দ্রপুর, দিঘিরপাড়, গাজিরহাট, বাঙ্গরাসহ বিভিন্ন সিএনজি স্ট্যান্ড, বাস স্ট্যান্ড, ভ্রাম্যমাণ দোকানসহ সর্বত্র চাঁদা আদায় অব্যাহত রয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ- কুমিল্লা সড়কের একটি পরিবহনের মালিক জানান, আগে যা দিতাম এখন তার দিগুণ দেয়া লাগে। না দিলে জোড় করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক মুরাদনগর সদরের কয়েকজন ভ্রাম্যমাণ দোকানদার বলেন, আগেও চাঁদা দেয়া লাগতো, এখনো দেয়া লাগে। একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীদের প্রতিদিন একশো টাকা করে চাঁদা দিতে হয়।
কোম্পানীগঞ্জ বাজারের সবজি, মাছ, শুটকি দোকানদাররা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশ থেকে হাসিনার পতন হইছে, চাঁদাবাজি তো থেমে নেই। আমাদের ডেইলি চাঁদা দেয়াই লাগে।
এছাড়াও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পুরো উপজেলায় চলছে অবৈধ ড্রেজারে মাটি উত্তোলন। কোন কোন ড্রেজার থেকে ফুট হিসেবে আবার কোথায় মাসোয়ারা হিসেবে চাঁদা নিচ্ছে। ফসলি জমি কেটে ইটভাটায় এক্সভেটর দিয়ে মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি।
এ নিয়ে জনমনে চরম বিরক্তি ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।