মোংলায় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশে। এ উপলক্ষে বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে কানাইনগর মোড়ে সুজন মোংলা উপজেলা কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুজন মোংলা উপজেলা কমিটির সভাপতি মোঃ নূর আলম শেখ। তিনি বলেন, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হিসেবে খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, ইন্টারনেট সেবা ও ভোটাধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে। কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। গোপন ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন ও দলে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের কোনো পদ না দেওয়ার নীতিও তিনি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে সুজন প্রস্তাবিত জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। এই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। বক্তারা আরও বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালনে একটি দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও প্রভাবমুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। যাতে প্রয়োজনে কমিশন নির্বাচন স্থগিত, বাতিল বা পুনঃনির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

বক্তারা আরও বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে এবং জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতা দূরীকরণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক নেতা আব্দুর রশিদ হাওলাদার, কাজী নজরুল ইসলাম, অসীমা সরকার, নজরুল শিকদার, মেহেদী হাসান, বৃষ্টি সরকার ও মিতালী মণ্ডল প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’ ২০০২ সালের ১২ নভেম্বর ‘সিটিজেন ফর ফেয়ার ইলেকশন’ নামে যাত্রা শুরু করে এবং ২০০৩ সালে বর্তমান নাম গ্রহণ করে।