বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমতির সহ-সভাপতি মাওলানা হাবীব আহম্মদ শিহাব বলেন, ইমামগণ মানুষকে অপরাধ নয় কল্যাণের পথে ডাকেন। সেই ইমামকে পিটিয়ে হত্যা এটি ইতিহাসের জঘন্যতম অপরাধ। এই অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। সেটি করা না হলে, সারাদেশের প্রায় ৯ লাখ ইমাম-মুয়াজ্জিন নিয়ে পুলিশ প্রধানের কাছে যাবো। প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়ে বিচার চাইবো। ন্যায়বিচারের জন্য চাপপ্রয়োগ করবো। তবে এই মুহূর্তে নয়। আগে দেখবো, স্থানীয় প্রশাসন কি ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুরের মসজিদের ইমাম মরহুম মাওলানা কাউছার হোসেন মিলনের (৫৫) পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কবর জিয়ারত শেষে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন নেতৃবৃন্দ।

মাওলানা হাবীব বলেন, অপরাধীদের কোন দলীয় পরিচয় নেই। তাদের পরিচয়, তারা অপরাধী। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাবো। কোন সন্ত্রাসী বা অপরাধীকে যেন আশ্রয় না দেয়। তাদের জন্য যেন তদবির না করে। প্রশাসনকে প্রভাবিত না করে। বরং ইমাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে তারা সহযোগিতা করবে। এমনটি প্রত্যাশা জাতীয় ইমাম সমিতির।

তিনি আরও বলেন, সামাজিক একটি ঘটনা নিয়ে একদল সন্ত্রাসীর হামলার শিকার হচ্ছেন হত্যাকাণ্ডের শিকার ইমামের ছোট ভাই। তখন চাচাকে রক্ষা করতে মরহুম কাউছার আহমেদের ছেলেও ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলার শিকার হয়। খবরটি পেয়ে সন্তানকে বাঁচাতে ইমাম সাহেব সেখানে গিয়েছেন। ওই সময় সন্ত্রাসীরা তাকেও মারধর করে। সে ঘটনার কিছু সময় পর তিনি মারা যান। হামলাকারীরা একটি রাজনৈতিক দল (বিএনপি) এর কর্মী ও নেতা ছিলেন। আমরা প্রসাশনের নিকট এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহি উদ্দিন বলেন, মাওলানা কাউছার হামলার শিকার হয়ে মারা গিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে হবে। প্রশাসনকে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। না হয় সারাদেশের ইমাম-মুয়াজ্জিনরা বসে থাকবে না। তারা প্রতিবাদ জানাবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। ইমাম-মুয়াজ্জিনদের আপনারা দুর্বল ভাববেন না। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে, জাতীয় ইমাম সমিতি মনে করে এই হত্যাকান্ডের যথাযথ বিচার দেশের প্রশাসন করবে।

উল্লেখ্য, জামায়াত নেতা কাউছার আহমেদ মিলনের মৃত্যুর ঘটনায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। রোববার (৮ জুন) সন্ধ্যায় নিহতের স্ত্রী শিল্পী আক্তার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এতে এজাহারভুক্তরা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কাউছার বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে হামলার শিকার হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাসায় চলে আসেন। কিন্তু সন্ধ্যায় তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেন।