বাগেরহাটের মোংলায় কোস্টগার্ডের পরিচালিত এক বিশেষ অভিযানে সুন্দরবনের কুখ্যাত ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর এক সহযোগীকে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আটক করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের জেলেদের আতঙ্ক হয়ে ওঠা এই দস্যুবাহিনীকে নির্মূল করার লক্ষ্যে কোস্টগার্ডের এ অভিযানকে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়— করিম শরীফ বাহিনীর সদস্যরা ডাকাতির উদ্দেশ্যে সুন্দরবনের শেলা নদী সংলগ্ন তাম্বুলবুনিয়া খাল এলাকায় অবস্থান নেবে। তথ্য পাওয়ার পরপরই সকাল ৬টার দিকে কোস্টগার্ড বেইস মোংলা থেকে একটি বিশেষ দল ওই এলাকায় অভিযান চালায়।
অভিযান চলাকালে কোস্টগার্ডের উপস্থিতি আঁচ করতে পেরে ডাকাত দলের সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করে। তবে কোস্টগার্ড সদস্যদের ধাওয়া খেয়ে তাদের একজন সহযোগীকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি একনলা বন্দুক, দুই রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ছয় রাউন্ড ফাঁকা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
আটক ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করে কোস্টগার্ড জানায়, তিনি হলেন আলমগীর হোসেন সাগর (৪৫), বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার বাসিন্দা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে করিম শরীফ বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং নিয়মিতভাবে দলটির ডাকাতি কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় রসদ সরবরাহ করতেন।
কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটককৃত ডাকাত সহযোগী এবং উদ্ধার করা অস্ত্র ও গোলাবারুদের বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়া সুন্দরবনের নিরীহ জেলে ও বনজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং পুরো বনাঞ্চলকে দস্যুমুক্ত করতে কোস্টগার্ডের এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, করিম শরীফ বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন খাল, নদী ও খাড়িতে জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়, মাছ ও বনজ সম্পদ লুটপাটসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এই বাহিনীর কারণে জেলে ও বনজীবীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। তাই কোস্টগার্ডের এই অভিযান এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ও আশার সঞ্চার করেছে।